Quantcast
Channel: Fauna – NSSB
Viewing all 39 articles
Browse latest View live

শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের জীবনধারা( শেষ পর্ব )

$
0
0

লক্ষ কোটি বছর আগে যখন পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব ছিলনা তখন এখানে শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের আবির্ভাব হয়েছিল এবং এই পৃথিবীতে এমন অনেক স্থানই আছে যেখানে মানুষের পক্ষে বসবাস করা সম্ভব নয় সেসব স্থানেও এরা আবাস গড়েছে। এদের মধ্যে অনেক প্রজাতিরই সময়ের সাথে আগমন এবং বিলুপ্তি ঘটেছে কিন্তু অনেকেই আছে যারা কিনা সেই ডাইনোসরের যুগ থেকে এখন পর্যন্ত অবিকৃত অবস্থায় টিকে আছে। এদের শরীর শক্ত খোলক দ্বারা আবৃত থাকার কারণেই এরা অনেক সমস্যা থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে পেরেছে। আজকের এই পর্বে আপনাদেরকে শক্ত আইশ দ্বারা আবৃত সরীসৃপদের সম্পর্কেই কিছু নতুন কথা জানাতে চেস্টা করব।

1

সরীসৃপ পর্বের বিভিন্ন সদস্য সূর্যকে কাজে লাগিয়ে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পারলেও কচ্ছপেরা এমনটি পারেনা, এরা এদের চারপাশের পরিবেশ থেকে তাপ সংগ্রহ করে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে। এজন্য মাঝে মাঝেই গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপের বিভিন্ন আগ্নেয় পর্বতের পাশে বিভিন্ন কচ্ছপদের দেখা মেলে। এরা নিজেদেরকে গরম করতেই এসব প্রতিকূল পরিবেশ ভ্রমণ করে। এরা অনেক বছর বাঁচতে পারে যেমন কিছু কিছু সদস্য প্রায় ১৫০ বছর ও বেঁচে থাকে। গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপের এসব কচ্ছপদেরকে Giant Galapagos Tortoise বলা হয়।
অনেক বড় ক্যারাপেস দ্বারা আবৃত থাকার কারণে এদের স্বাভাবিক কাজকর্মের গতি অনেক কম হয়ে যাবার কথা এবং অনেক কাজকর্মের মধ্যেই জটিলতা সৃষ্টি হবার কথা কিন্তু সবক্ষেত্রেই তারা এসব জটিলতা দূর করার জন্য নিজস্ব বুদ্ধি বের করে নিয়েছে। কিন্তু এখনো এরা নানান সমস্যায় প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হয় যেমন মিলনের শুরুতে অনেক সমস্যা হয়। পুরুষ সদস্যের তুলনায় স্ত্রী সদস্য তুলনামূলক ছোট হয়। পুরুষ সদস্যের নীচের অংশ অবতল আবার স্ত্রী সদস্যের ওপরের অংশ উঁচু থাকে যার কারণে একবার পুরুষ সদস্যটি স্ত্রী সদস্যের শরীরের ওপরে চড়তে পারলে আর সমস্যা নেই কিন্তু চড়তে গিয়েই অনেক বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়। একটা চামচের ওপরে আরেকটা চামস সোজা করে রাখলে যেরকম অবস্থা হয় এখানে ঠিক একই রকম অবস্থা হয়। মিলন শুরু হবার পরে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে চলতে থাকে।

2

উত্তর আমেরিকাতে Eastern Box Turtle পাওয়া যায়। যেখানে এদের আবাস সেখানে এদের নানান রকম প্রতিবন্ধকতা এবং শত্রু রয়েছে যার কারণে এদেরকে অনেক সচেতন থাকতে হয়। Raccoon এরকমই একটি শিকারি প্রাণি কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে এসব কচ্ছপদের শিকার করা অনেকটাই অসম্ভবের কাছাকাছি। এই শিকারি প্রাণিটি কাছে আসামাত্রই এরা এদের খোলকের মধ্যে এমনভাবে ঢুকে যায় যে এদের খোলকে এমন একফোটা ছিদ্রও থাকেনা যেখানে কিনা এরা দাঁত ঢোকাতে পারবে! এবং যারকারণে কিছুসময় চেস্টা করার পরেই এরা হাল ছেড়ে দেয় এবং এদেরকে ওভাবে রেখেই চলে যায়। শরীর বাক্সের ভেতরে থাকলে এটা দেখা সম্ভবপর হয়না যে আশেপাশে কি হচ্ছে বা শিকারি প্রাণিটি পাশে আছে কিনা এজন্য শরীর বের করার পূর্বে এরা প্রথমে মাথা একটু বের করে চারপাশে পরখ করে নেয়।
প্রচন্ড গরমে আমরা যেমন ঘেমে যায়, কচ্ছপ কিংবা অন্যান্য সরীসৃপেরা কিন্তু এমনটা পারেনা কারণ এদের ঘর্মগ্রন্থি থাকেনা। গরম থেকে বাঁচতে এরা মাটির নীচে অবস্থিত গর্তে আশ্রয় নেয়। এসব গর্তগুলো এই কচ্ছপদের নিজেদের তৈরী এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৬০-৭০ ফুট হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন সাপও গরম থেকে বাঁচতে এসব গর্তে এসে আশ্রয় নেয়। গবেষকদের মতে কচ্ছপদের এসব গর্তে বিভিন্ন পর্ব বা শ্রেণির ১০০ এরও অধিক প্রজাতি এসে আশ্রয় নেয়। এদের একের অধিক গর্ত থাকে যার কারণে এরা একেক সময় একেক গর্তে আশ্রয় নিতে পারে। মাঝে মাঝে দাবানলের আগুনে গাছপালা পুড়ে ছাই ছাই হয়ে যায় তখন বিভিন্ন প্রাণি এসব গর্তে এসে আশ্রয় নেয়।
একটু চিন্তা করলেই বোঝা যাবে যে এসব গর্তই এদের একমাত্র লুকোবার স্থান নয় বরং এর থেকে অনেক ভাল স্থান আছে সেইটা হচ্ছে পানি। কিছু কিছু কচ্ছপ তাদের জীবনের সমস্ত ভাগই পানিতে কাটায় আর এরা কাছিম নামে পরিচিত। এরা পানির নীচে হেটে বেড়ায়। শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের বসবাসের জন্য সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থানই হচ্ছে পানি কারণ দিনের বেলাতে এখানে তাপমাত্র তুলনামূলক বেশী ও রাত্রে তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এজন্য এরা খুব সহজভাবেই নিজেদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পারে।

3

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরভাগের নদীগুলোতে Pignosed Turtle পাওয়া যায়। শূকরের নাকের মতোন নাক থাকার কারণেই এদের এরকম নামকরণ। যেহেতু এদের পূর্বপুরুষেরা স্থলবাসী ছিল সেই কারণে এদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর পর পানির ওপরে উঠে এসে নিশ্বাস নিতে হয়। আবার স্ত্রী সদস্যেরা পানির কাছাকাছি স্থানে গর্ত করে বালির মধ্যে ডিম পাড়ে। গরমের দিনে যখন পানির স্তর নীচে নেমে যায় তখন এরা ডিম পারে আর এসব ডিমকে অবশ্যই শুস্ক স্থানে থাকতে হয় তা নাহলে এদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। বর্ষাকালে এসব ডিম ফেটে বাচ্চা বের হয়। বৃষ্টির পানি এদের ডিমের গায়ে লাগার সাথে সাথেও ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং পানিতে নেমে আসে। অন্যান্য কাছিমদের জন্য এমন হলে মৃত্যু সুনিশ্চিত থাকতো কিন্তু এরা ডিমের মধ্যে পরিণত হবার পরেও বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করবার কারণে নিরাপদের পানিতে নেমে যেতে পারে। আর এদের অপেক্ষা করার পেছনে কারণ হচ্ছে যে, ঐ সময় পানিতে অনেক খাবার পাওয়া যাবে। এসব সদস্যের স্ত্রী সদস্য পরবর্তীতে ডিম পাড়তে পানি ছেড়ে মাটিতে উঠলেও কোন পুরুষ সদস্যের ক্ষেত্রে এমনটা হয়না। তারা আর কখনো ওপরে ফিরে যায়না।
মিঠাপানিতে টিকে থাকার ক্ষেত্রে এরা অনেক দক্ষ এবং অন্য আর কোন মিঠাপানির কাছিমের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়না। কিন্তু পরিবেশের সাথে টিকে থাকার সবথেকে বড় পরীক্ষা দিতে হয় সাগরে বসবাসকারী কাছিমদের। এরা মিলনরত অবস্থায়ও সাঁতার কাটতে থাকে। পুরুষ সদস্যের সামনের হাতের ফ্লিপারে এক ধরণের কাঁটার মতোন অংশ থাকে যার সাহায্যে স্ত্রী সদস্যের ক্যারাপেসের সাথে আটকে থাকে আর স্ত্রী সদস্যটি এসময়ে সাঁতার কাটতে থাকে। কিন্তু এরা যখন মিলনরত অবস্থায় থাকে তখন অন্য পুরুষ সদস্য এসে এদেরকে বাধা দেয় এমনকি মিলনরত পুরুষ সদস্যকে টেনে হিঁচড়ে আলাদা করতে চেস্টা করে। যদি ঐ একবার ঐ পুরুষ সদস্যটি আলাদা হয়ে যায় তাহলে আর মিলনে অংশ নিতে পারেনা। অনেক সময় ৩-৪ এমনকি তার থেকে বেশী পুরুষ কাছিম এসেও এদেরকে আলাদা করতে পারেনা।
প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে পানিতে কচ্ছপদের পা পড়লেও এখানে আরো এক শক্তিশালী সরীসৃপ গ্রুপের বাস। এরা হচ্ছে কুমির, কচ্ছপদের মতোন এদেরও ডাইনোসরের সময়কাল থেকে এখন পর্যন্ত খুব কমই পরিবর্তন ঘটেছে। কচ্ছপদের মতোন এদের শরীরও শক্ত খোলকে আবৃত থাকলেও এদের প্রতিটি আইশের নীচে রক্তজালিকা থাকে যার কারণে এরা সূর্যের আলোর নীচে থেকে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পারে।
শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের প্রধান বৈশিষ্ট হচ্ছে এদের বিপাক হার অনেক কম যার কারণে দীর্ঘ অনেকদিন এরা না খেয়েও বেঁচে থাকতে পারে অথচ উষ্মরক্তবিশিষ্ট প্রাণি যেমন সিংহ বেশিদিন না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারেনা এ কারণে স্তন্যপায়ীরা আবাস গড়তে পারেনা এমন অনেক স্থানেই এসব প্রাণিদেরকে দেখা যায়।

4

উত্তর অস্ট্রেলিয়ার এক রাস্তা আছে যার দুপাশে নদী এবং মাঝে মাঝেই নদীর পানিতে এই রাস্তা ডুবে যায়। রাতের বেলা এখানে অনেক কুমির জড়ো হয় এবং কিছু কিছু সদস্য আবার প্রায় ৬০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসে। সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এদের এখানে আসার নিশ্চয় নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে, আসলেই তাই! রাতের বেলা জোয়ার থাকার কারণে অনেক মাছের আগমন ঘটে এবং মাছগুলো লাফালাফি করে। কিন্তু এসময় একদম গাঢ় অন্ধকার থাকে যার কারণে কিছুই দেখা যায়না। এসময় এসব কুমিরেরা হা করে থাকে, চোয়ালে কিংবা শরীরের কোথাও মাছের ছোঁয়া পাওয়া মাত্রই এরা মাছের ওপরে লাফিয়ে পড়ে। এভাবেই এরা মাছ শিকার করে থাকে।
এসব স্থানে প্রায় ৪০-৫০ টি কুমির থাকে যার কারণে অনেকগুলোই খাবার পায়না। এরা পরবর্তী জোয়ারের অপেক্ষায় থাকে। পরবর্তী জোয়ার দিনে হয় এবং এরা তখন আবার একই উপায়ে মাছ শিকার করে কিন্তু এসময়ের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে, এরা এসময় দেখতে পারে এবং তুলনামূলক অনেক সহজভাবেই মাছ শিকার করতে পারে।
বিভিন্ন ব্যাঙ ও গিরগিটি শ্রেণির প্রাণিদের মধ্যে কুমিরই হচ্ছে সবথেকে বাচাল প্রকৃতির সদস্য। প্রজনন ঋতুতে এরা অনেক হরহামেশায় ডাকতে থাকে। এদের প্রত্যেক সদস্যের নিজস্ব সীমানা থাকে এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর এদের শরীরে কাঁপন অনুভূত হয়। আর এরা এমনভাবে কাঁপতে থাকে যে এদের শরীরের ওপরের পানির অংশ নাচতে থাকে আর এই শব্দ পানিতে প্রায় ১০০ মিটার দূর থেকে শোনা যায়। এদের একজনের সীমানার মধ্যে অন্য কেও আসলে এরা কিন্তু শক্তির পরীক্ষায় নামেনা বরং চোয়াল বড় করে থাকে। আরেকভাবে এরা সংকেত দেয়, তা হচ্ছে, পানির সামান্য উঁচু দিয়ে এরা পিঠের কিছু অংশ পানির সমান্তরালে নিয়ে নিজেদের কতৃত্বের জানান দেয়। নিজেদের সদস্যদের মধ্যে শব্দ সৃষ্টির মাধ্যমে যোগাযোগ করা কিন্তু ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার আগেই শুরু করে। বাচ্চাগুলো ডিম ফুটে বের হবার পূর্বে এক ধরণের শব্দ করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে।
ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার পরে এসব বাচ্চা মাকে ডাকতে থাকে, যদি এসব মা কুমির অনেক দূরে থাকে তারপরেও এই ডাক শুনে চলে আসে। কিন্তু এদের মনে রাখার ক্ষমতা খুব বেশি না হবার কারণে প্রথমে বের করতে পারেনা যে আসলে কোথায় তার বাচ্চাগুলো আছে! এজন্য কিছু সময় আবার কান পেতে বাচ্চাগুলোর ডাক শুনতে চেস্টা করে। বুঝতে পারার সাথে সাথেই আস্তে আস্তে মাটি সরিয়ে বাচ্চাগুলোকে বের করে আনে। বের করে আনার পরে কিন্তু এরা বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে চলে আসেনা বরং বাচ্চাগুলোর জন্য একটা ছোট জলাশয় নির্ধারণ করে এবং একটা একটা করে বাচ্চা ঐ জলাশয়ে নিয়ে যায়। কিছু কিছু বাচ্চা আবার নিজ থেকে মাকে অনুসরণ করে এবং অনবরত ডাকতে থাকে আর সেই ডাক শুনে ঐ মা তার সব সন্তানদের খুঁজে বের করতে পারে। এখানেই এদের কাজ শেষ হয়ে যায়না, ঐ বাসাতে এমন কিছু ডিম থাকে যেগুলো থেকে বাচ্চাগুলো বের হতে পারেনি, এসব মা কুমির ঐগুলোকে একটা একটা করে জলাশয়ে নিয়ে আসে এবং দাঁত দিয়ে প্রথমে ওপরের শক্ত আবরণ ভাঙে এরপর ডিমের চামড়ার আবরণ ছিদ্র করে বাচ্চাকে বের হতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের সাহায্যের জন্য প্রায় একমাস এরা বাচ্চার পাশে থেকে বড় হতে সাহায্য করে এবং শিকারি প্রাণিদের হাত থেকে রক্ষা করে।
বাচ্চা পালনের ক্ষেত্রে কুমির সর্বদায় অনেক দায়িত্বের মর্যাদা রক্ষা করে কিন্তু ভেনিজুয়েলাতে এক ধরণের কুমির পাওয়া যায় যারা কিনা এদিক দিয়ে শ্রেষ্টত্বের দাবীদার। এখানে নার্সারি পুলে অনেক সদস্যের বাচ্চা থাকলেও এসব বাচ্চাকে রক্ষা করার দায়িত্বে থাকে নির্দিষ্ট সদস্য এবং এদের কাজই হচ্ছে এদেরকে রক্ষা করা যদিও এর মধ্যে খুবই অল্প সংখ্যক এর বাচ্চা। স্থলে বিভিন্ন শিকারি প্রাণি ঘোরাফেরা করে আর পানিতে এসব বাচ্চা কুমির মায়ের সাথে থাকে, বিপদের গন্ধ পেলেই এরা ঐ কুমিরের পিঠের ওপরে যেয়ে থাকে কিন্তু এরা সংখ্যায় এতোটায় বেশি যে সবার জন্য স্থান সংকুলান হয় না। আবার বেশি গরম পড়লে এসব পুলের পানি শুকিয়ে যায়।
এসময় এরা নিকটস্থ কোন পুলে যেখানে পানি আছে, এমন এক জায়গাতে এদের নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার সময়ে স্ত্রী কুমিরটি একটু যায় আবার বাচ্চাগুলোর জন্য অপেক্ষা করে, আবার যায় আবার বাচ্চার ডাকের জন্য অপেক্ষা করে, একটা বাচ্চাও যদি পেছনে পড়ে থাকে তাহলে এরা আর সামনে আগায়না এভাবেই এরা একসময় নিকটস্থ পুলে পৌঁছে যায় এবং বাচ্চাগুলোকে বাচায়। যদি স্ত্রী কুমিরটি এরকম করে বাচ্চাগুলোকে না আনতো তাহলে বেশীরভাগ বাচ্চাই মারা যেত। নিজের বাচ্চা না হবার পরেও এসব কুমির এভাবেই এতোগুলো বাচ্চার জীবন রক্ষা করে।
উভচর ও সরীসৃপদেরকে আমরা শীতল রক্তের বললেও তারা অনেক ক্ষেত্রেই এমন কিছু করে যা তাদের উষ্ম হৃদয়েরই পরিচয় বহন করে। এদের প্রতিটি প্রজাতির মধ্যেই রয়েছে বিস্ময়ের ভান্ডার যার বেশীরভাগই রয়েছে আমাদের অজানা। এরা এমন কিছু কাজ করে যা কিনা অনেক ক্ষেত্রে মানুষকেও হার মানায়, এদের সৌন্দর্য অনেকক্ষেত্রেই পাখিদেরকেও হার মানায়।

• তথ্যসূত্রঃ The Life in Cold Blood (Documentary)

শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের জীবনধারা (প্রথম ভাগ)

শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের জীবনধারা (পর্ব-২)

শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের জীবনধারা (পর্ব-৩)

শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের জীবনধারা (পর্ব-৪)

লেখক পরিচিতি-

Shawan Chowdhury

Shawan Chowdhury

Department Of Zoology
University of Dhaka
E-mail add- shawan_zl@yahoo.com
Interest- To be with nature
Facebook id: Shawan Chowdhury
(Search by using this e-mail,shawan1094061@yahoo.com)

The post শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণিদের জীবনধারা( শেষ পর্ব ) appeared first on NSSB.


চাতুলের চতুরতা

$
0
0

অধ্যাপক শফিক হায়দার ও মনোয়ার হোসেনের ফিল্ড গাইড অনুযায়ী Monkey Puzzle এর বাংলা নাম ‘চাতুল’। চাতুলের অনিন্দ্য সুন্দর পাখার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবে সবাই। পুরুষ প্রজাতির ওপরের দিকটা কালচে বাদামী আর স্ত্রী প্রজাতিতে কিছুটা অনুজ্জ্বল ফ্যাকাশে বাদামী। সামনের ডানার ওপরের দিকে তিনটা সাদা ফুটকি আর পেছনের ডানার কিনারার দিকে লাল কিংবা কমলা রঙের এক সারি ফুটকি দেখা যায়। স্ত্রী প্রজাপতির নীচের দিকের সামনের পাখার কিনারার দিকটা উজ্জ্বল বাদামী এবং পাখার মাঝ বরাবর অর্ধবৃত্তাকারে সাদা যার অনুজ্জ্বল বাদামী, হলুদ রঙের দাগগুলো নীচের পাখনার দাগগুলোর সাথে এমনভাবে মিশে গেছে যেন তা শিল্পীর পরম আদরে আঁকা।

Monkey puzzle unপুরুষ প্রজাতিতে সামনের পাখার কিনারার অংশ কালচে বাদামী হয়। উভয় পাখার নীচের দিকের বাইরের অংশে একসারি লম্বা অনুজ্জ্বল কমলা দাগ থাকে এবং ভেতরের দিকে সামনের পাখার মাঝ বরাবর এক সারি সাদা দাগ দেখা যায়। পেছনের পাখাতে সাদা ফিতার মতোন উজ্জ্বল তিন জোড়া লেজ থাকে যাদের মিলনস্থলে কালো রঙের বড় ফুটকির দেখা মেলে। এদের মুখমন্ডল সাদা ও চোখ কালো। সাদা ও কালো রঙের মিশেলে অপূর্ব সুন্দর এদের পা এবং এন্টেনা। দু’চোখের মাঝ বরাবর পাল্প নামক সংবেদী অংগ থাকে। আর পাখা বন্ধ অবস্থায় তিন জোড়া লেজ এমনভাবে থাকে যেন একজোড়া সামনের পা মাঝের লম্বা লেজ, জোড়া এন্টেনা এবং ওপরের খাটো জোড়া পাল্পের মতোন দেখায় একইসাথে লেজগুলোর মিলনস্থলের কালো ফোঁটা দেখতে অনেকটা চোখের মতোন হয়।

Monkey puzzle up ps (1)অধিকন্তু এটি উড়ে গিয়ে কোথাও বসেই লেজ খাঁড়া করে উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করে। যার ফলে পাখি ও অন্যান্য বিভিন্ন শিকারী প্রাণিরা খুব সহজেই ধাঁধাঁয় পড়ে যায় যেকোন দিকে মাথা আর কোন দিকটায় লেজ! একারণেইএই প্রজাপতির ইংরেজিনামকরণ Monkey Puzzle করা হয়েছিল। Lepidoptera বর্গের Lycanidae পরিবারের এই প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম Rathindaamor. এখন পর্যন্ত এদের কোন উপপ্রজাতির সন্ধান মেলেনি।এরা রংগন গাছে (Ixorasp) সাদা রঙের খুব ছোট ডিম পাড়ে ও গাছের পাতা খেয়েও এদের লার্ভা বেঁচে থাকে।

ঢাকা শহরের প্রজাপতি নিয়ে গবেষণারত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত কুমার নিয়োগী বলেন, ‘Monkey Puzzle অনেকটা উপশহরাঞ্চলীয় প্রজাপতি হলেও এর বিস্তার ব্যাপক। ঢাকার জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের এটি একটি বেশ পরিচিত প্রজাতি। যদিও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে রাজধানী ঢাকায় এর আবাসস্থল অনেকটাই হুমকির মুখে।‘ বাংলাদেশ ছাড়াও আসাম, সিকিম, কোলকাতা, উড়িষ্যা ও দক্ষিণ ভারতেও এদের দেখা মেলে।

লিখেছেন-

তানভীর আহমেদ

২য় বর্ষ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ,

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

The post চাতুলের চতুরতা appeared first on NSSB.

Hispaniolan Woodpecker

$
0
0

wood peaker

The Hispaniolan woodpecker (Melanerpes striatus) is a medium sized woodpecker found in the Caribbean island of Hispaniola. The woodpeckers habitat maily restricted to Haiti and Dominican republic.Also found few caribbean islands inther Greater Antilles

Size : 20-24cm , Weight – male 83–92 g, female 65–75 g

Found all over the islands from sea level to 2400mtr above. Normally feeds on fruits,insects,also spiders, scorpions (Scorpiones); lizards and tree sap(tree juice/liquid).

IMG_0939

Some places this birds are considered as agricultural pest for sufficiently abundant in numbers especially near fruit orchards.
IMG_0895

It is a very attractive woodpecker with a largely red crown and nape (most extensive in males, which also have distinctively longer bills), gray cheeks, black and yellow-green barred upper   parts, a red rump and black tail, and dark buffy-olive underparts. It nests in tree-cavities and breeds in loose colonies of up to 20 pairs to protect nesting bank.

 

The post Hispaniolan Woodpecker appeared first on NSSB.

পরিযায়ী মাছ

$
0
0

parijayi maas

প্রতি বছর ২৪শে মে বিশ্ব পরিযায়ী মৎস্য দিবস পালিত হয়। পরিযায়ী প্রাণি বলতে এমন সব প্রাণি বোঝায় যারা কিনা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যায় এবং নির্দিষ্ট সময় পরে আবার আগের স্থানে ফিরে আসে। সাধারণত খাদ্যের স্বল্পতা, স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ, প্রজননের সুবিধা ইত্যাদি কারণে এরকম পরিযায় ঘটে থাকে। এটি সব ধরণের প্রাণির মধ্যেই দেখা যায় তবে পাখি ও মাছের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশী লক্ষণীয়।

পরিযায়ী পাখি সম্পর্কে সবার স্বচ্ছ ধারণা থাকলেও পরিযায়ী মাছ সম্পর্কে অনেকেরই পরিমিত ধারণা নেই যার কারণে খুব কম সংখ্যক লোকই এ নিয়ে কথা বলেন। তবে এদের বেশিরভাগই পরিযায়ী মাছ হিসেবে স্যামনকেই চেনে। এরা প্রজননের সুবিধার্থেই এক স্থান হতে আরেক স্থানে যায়। এরকম ঘটনার সাথে সম্পর্কিত দুটি শব্দ আছে, এগুলো হচ্ছে Anadromous ও Catadromous. যেসব মাছ ডিম ছাড়ার জন্য সাগর হতে নদীতে আসে তাদেরকে Anadromous এবং যারা ডিম ছাড়ার জন্য নদী থেকে সাগরে যায় তাদের Catadromous বলা হয়ে থাকে।

স্যামন হচ্ছে অ্যানাড্রোমাস ফিস এবং ইলিশ হচ্ছে ক্যাটাড্রোমাস ফিস। মাইগ্রেশান বা পরিযায়ের জন্য কিছু কিছু মাছ অনেক মাইল পথ অতিক্রম করে। শুধুমাত্র ডিম ছাড়ার জন্য একপ্রকার মাছ প্রায় ৩৫০০ মাইল পথ পাড়ি দেয়। এরা হচ্ছে Chinook Salmon. আবার এমন কিছু মাছ আছে যারা কিনা খুবই অল্প দূরত্বের পথ পাড়ি দেয়, এরা এদের গ্রুপ থেকে কিছু দূরেই ডিম পাড়ে যেমন, River Herring তাদের স্কুল থেকে কিছু দূরেই পরিযায়ের জন্য যায়। এদের গ্রুপ স্কুল নামে পরিচিত।

পরিযায়ের সময় অনেক মাছই হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দেয় এবং নির্দিষ্ট সময় পরে আবার তাদের পূর্ববর্তী বাসস্থানে ফিরে আসে। কিন্তু কিভাবে যে এমনটা সম্ভব তার যথাযথ কারণ এখনও বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করতে পারেননি। মাছের স্মৃতিশক্তি তেমন একটা উন্নত নয় এবং কিছুদিন পরেই এরা আর আগের কথা মনে রাখতে পারেনা এজন্য কিভাবে যে এরা আগের স্থানে ফিরে আসে তা বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যময়। তবে বিজ্ঞানীরা এর পেছনে নানান কারণ দাঁড় করিয়েছেন। তাঁদের কারো কারো মতে, চৌম্বকক্ষেত্র এর সাথে সম্পর্কিত আবার কেও কেও মনে করেন এদের মনে হালকা কিছু স্মৃতি অবশিষ্ট থাকে যার সাহায্যেই এরা আগের স্থানে ফিরে যায়।

সবথেকে মজার বিষয় হচ্ছে, এসব পরিযায়ী মাছ বাস্তুতন্ত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এরা অনেক ছোট থাকা অবস্থায় অন্য স্থানে যেমন সমুদ্রে চলে যায় এবং আবার বড় হয়ে আগের অবস্থানে ফিরে আসে এবং কিছুদিন পরেই বেশিরভাগ সদস্য মারা যায়। এবং এদের শরীর নস্ট হয়ে যায় এবং অন্যান্য প্রাণিদের জন্য নানান ধরণের পুষ্টির উপাদান তৈরী করে। এভাবে এরা বাস্তুতন্ত্রে অনেক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

Chinook salmon হচ্ছে আকারে সবথেকে বড় পরিযায়ী মাছ যাদের কোন কোন সদস্য কিনা ১২৬ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে যদিও এদের বেশিরভাগ সদস্যই ৩০ পাউন্ডের বেশী হয়না।

পরিযায়ের সময়ে মাছগুলো নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়। এদের গতি অভিমুখে যদি বাঁধ থাকে তাহলে মাছের সংখ্যা অনেক কমে যায় কারণ প্রতিকূল পরিবেশে এরা ঠিকমতন টিকে থাকতে পারেনা। যেমন এরা কোন স্থানে গেল, যখন ফেরার কথা তখন যদি আগের স্থানের মাঝে কোথাও বাঁধ দিয়ে দেয়া হয় তাহলে এরা আর সেই স্থানে ফেরত আসতে পারেনা এবং ফলশ্রুতিতে মারা যায়। যদিও এসব মাছের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার পেছনে এসব বাঁধই একমাত্র কারণ নয় বরং নানান ধরণের কাল্ভারটও দায়ী।

কিছু কিছু স্যামন মাছ প্রায় ৬.৫ ফুট পর্যন্ত লাফ দিতে পারে, এমন সুবিধার কারণে এরা নানান সমস্যার হাত থেকে পরিত্রাণ পায়। যেমন ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত স্থানে যেতে এদের তেমন একটা বেগ পেতে হয়না আবার সামনে কোন বাঁধা থাকলে এরা সহজেই সেটা অতিক্রম করতে পারে।

Steelhead ও Rainbow Trouts একই প্রজাতির মাছ, প্রথমটি হচ্ছে পরিযায়ী প্রকৃতির আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে মিঠাপানির মাছ। বেশিরভাগ পরিযায়ী মাছই একবার পরিযায়ের পর মারা গেলেও Steelhead এমন একপ্রকার মাছ যারা কিনা তাদের জীবনে একাধিক পরিযায়ে অংশ নিয়ে থাকে।

এসব পরিযায়ী মাছের সংখ্যা দিনদিন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ক্যালিফোর্নিয়ার কলাম্বিয়া রিভার বেসিনে যেখানে ১০ থেকে ১৬ মিলিয়ন মাছ পাওয়া যেত আজ সেখানে মাত্র ১.৫ মিলিয়ন মাছ পাওয়া যায় আবার এদের মধ্যে মাত্র ৪০০০০০ মাছ মুক্তভাবে আসে বাকিগুলো বিভিন্ন হ্যাচারীতে পালন করা হয়।

The post পরিযায়ী মাছ appeared first on NSSB.

হালদা নদী : মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র

$
0
0

– মোঃ নাসিফ সাদাত
হালদা নদী হল কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার ভাটার নদী যেখানে মাছেরা প্রাকৃতিকভাবে ডিম ছাড়তে আসে। ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসের দিকে মাছ এসে অনুকূল পরিবেশের জন্য নদীতে অপেক্ষা করতে থাকে। এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত যেকোন অমাবস্যা বা পূর্ণিমার সময় মা মাছ ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার এই সময়কে স্থানীয় ভাষায় ‘জো’ বলে। ‘জো’ এর বৈশিষ্ট্য হল অমাবস্যা বা পূর্ণিমাতে বজ্রসহ বৃষ্টি হবে এবং নদীপথে পাহাড়ী ঢল নামবে। ঢলের পানিতে নদীতে জোয়ার আসবে। পূর্ণভাবে ডিম ছড়ার কিছুক্ষণ আগে পরিবেশ ডিম ছাড়ার উপযুক্ত কিনা তা যাচাইয়ের জন্য মা মাছ পরীক্ষামূলকভাবে ডিম ছাড়ে। একে স্থানীয়রা নমুনা বলে। নমুনা দেখতে পেলেই জেলেরা মহাসমারোহে ডিম সংগ্রহ শুরু করে।

জেলে কর্তৃক সংগৃহীত মাছের ডিম

জেলে কর্তৃক সংগৃহীত মাছের ডিম

হালদা নদীর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে এটি অন্যান্য নদী থেকে আলাদা। এ নদীতে কিছু বিশেষ ধরনের বাঁক দেখা যায় যাদেরকে বলা হয় অক্সবো বাঁক। এসব বাঁকে পানির স্রোতের গতিধারা থাকে যা অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনুঘটক তৈরি করে মাছের প্রজননের বিশেষ পরিবেশ সৃষ্টি করে। এই বাঁকগুলোতেই মা মাছ ডিম ছাড়ে। সমগ্র নদীতে এমন ১১টি অক্সবো বাঁক দেখা যায়। এছাড়াও এতে অনেকগুলো পাহাড়ী ঝর্ণা নিপতিত হয়েছে। প্রতিটি ঝর্ণার উজানে রয়েছে এক বা একাধিক বিল। পাশাপাশি নদীর গভীরতা, PH, দ্রবীভুত অক্সিজেন, খাদ্যের প্রাচুর্যতা ইত্যাদি সবই মাছের বংশবৃদ্ধির অনুকূল। তাই মাছ অন্য কোন নদীর চেয়ে হালদা নদীকেই ডিম ছাড়ার উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নেয়।

map-halda river

The post হালদা নদী : মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র appeared first on NSSB.

ইবোলা- প্রয়োজন সাবধানতার

$
0
0

– Md. A. K .S. Meer
অতি সম্প্রতি সারা পৃথিবীতেই ইবোলা নামের প্রানঘাতি একটি ভাইরাস এর সংক্রমন নিয়ে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেক আগে আবিস্কার করা হলেও ভাইরাসটির সাম্প্রতিক আক্রমনে তা পূর্বের সকল মাত্রা ছাড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই পশ্চিম আফ্রিকায় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ইবোলা ভাইরাস এবং এ  ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা গেছেন। আর এখন শুধু আফ্রিকাতেই নয় বরং এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকা সহ সারাবিশ্বেই ইবোলা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত এসব দেশে ইবোলায় আক্রান্ত মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO); এ ভাইরাসটি ছোঁয়াচে এবং প্রানঘাতি হওয়ায় এর ভয়াবহতাও ব্যাপক। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী পাওয়া তথ্য অনুসারে  এ বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত লাইবেরিয়া, গিনি, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া, এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৪,৯২২ জন মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে এবং উল্লিখিত দেশ গুলো সহ অন্য আরো কিছু দেশে সব মিলিয়ে ১৩,৭০৩ টির ও বেশী সংক্রমন সংক্রান্ত ঘটনা জানা গেছে। এমনকি নিরাপদ মনে করা অনেক দেশেও – যেমনঃ কানাডার আলবার্টা তে ইতোমধ্যেই একজনকে সনাক্ত করা হয়েছে এবং আমাদের দেশের আশেপাশের অনেক দেশেও (যেমন ভারতের চেন্নাইতে এবং অন্ধ্র প্রদেশে) ইবোলায় আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে ।

ebola virus

ইবোলা ভাইরাস

মধ্য আফ্রিকার উত্তরাংশে কঙ্গোর উপত্যকায় প্রবাহিত ইবোলা নদী থেকে ইবোলাভাইরাসের নামকরণ করা হয়েছে। সর্বপ্রথম ১৯৭৬ সালে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়। মার্বুগ ভাইরাসের সাথে এ ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে যা ১৯৬৭ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল এবং প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিলো যে এটি মার্বুগ ভাইরাসের কোন নতুন স্ট্রেইন । ইবোলা ভাইরাসের পাঁচটি ভিন্ন নাম রয়েছে – ইবোলা-জায়ারে, ইবোলা-সুদান, ইবোলা-আইভোরি কোস্ট, ইবোলা-রেস্টন এবং ইবোলা-বুন্দিবুগিও। এ নামকরণগুলো ছড়িয়ে পড়া এলাকার নামানুসারে হয়েছে। প্রথম একসাথে ছড়িয়ে পরে ১৯৭৬ সালে সুদানের এবং কঙ্গোর গ্রামাঞ্চল থেকে। ইবোলা ভাইরাস গোত্রের ৫টির মধ্যে ৪টি প্রজাতি, মানুষের ও অন্যান্য ম্যামালদের শরীরে সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ করার ক্ষমতা রাখে , বাকি ১টি প্রজাতি মানুষের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে ইবোলা জায়ারে । প্রথমবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানব মৃত্যুর হার ছিল শতকরা ৯০ শতাংশ !

ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (EVD), ইবোলা হেমোরেজিক ফিভার (EHF) বা শুধু ইবোলা হল ইবোলা ভাইরাসঘটিত রক্তপ্রদাহজনিত মনুষ্য রোগ যা একটি আরএনএ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়।কিছু প্রাণীর শরীরের রক্তে এ ভাইরাস বসবাস করে। বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে, যে সকল প্রাণী এ ভাইরাস বহন করছে সেগুলো মূলতঃ কয়েক প্রজাতির বানর অথবা কলা খায় এমন বাদুড়। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে কোন সংক্রামিত পশুর রক্ত বা শরীরের যেকোন ফ্লুইড এর সংস্পর্শ থেকে। আফ্রিকায় বানর, শিম্পাঞ্জী এবং অন্যান্য নন-হিউম্যান প্রাইমেটদের মধ্যে ইবোলা ভাইরাস পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে বাতাসের মাধ্যমে অন্য কোন ফ্লু এর মতন এটির সংক্রমণের কোন খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ।  ধারণা করা হয় বাদুর, বিশেষ করে ফল খায় এমন বাদুর নিজে আক্রান্ত না হয়ে এই রোগ বহন করে ও ছড়ায়। এর চেয়ে একটু কোমল স্ট্রেইনের ইবোলা ভাইরাস ফিলিপাইনে বানর ও শুকরের মধ্যে আবিস্কার করা হয়েছে।

ইবোলা যেভাবে ছড়িয়ে পরে

ইবোলা যেভাবে ছড়িয়ে পরে

জীবিত পুরুষের বীর্য-এর মাধ্যমে এই রোগ প্রায় দুই মাস পর্যন্ত পরিবাহিত হতে সক্ষম। মানব শরীরে একবার সংক্রমণ ঘটলে মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আফ্রিকায় বানর, শিম্পাঞ্জী এবং ফলাহারী বাদুরের মধ্যে মার্বুগ ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। কোন সংক্রামিত প্রাণীর শরীর থেকেই প্রথম এ ভাইরাসটি মানবদেহে সংক্রামিত হয়। আক্রান্ত প্রানীর গোশত কাটা বা খাওয়ার মাধ্যমে কোন পর্যায়ে অথবা কোন গবেষক বা বিজ্ঞানী, যিনি আক্রান্ত প্রাণীর কোন ধরণের অপারেশান করেছেন বা গবেষণা করেছেন তাদেরকেই ভাইরাসটি প্রথম সংক্রামিত করে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।সিবিসি নিউজ পোর্টালে প্রকাশ হওয়া খবরে জানা যায়, আমেরিকার মতন উন্নত দেশে যথেস্ট সাবধানতা অবলম্বন করার পরেও এ রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির চিকিৎসা করতে থাকা চিকিৎসক এবং কয়েকজন নার্স কোন একটা পর্যায়ের সাময়িক অসাবধানতায় ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

আফ্রিকার কোন একটি দেশে বাদুর বিক্রি করা হচ্ছে

আফ্রিকার কোন একটি দেশে বাদুর বিক্রি করা হচ্ছে

আফ্রিকার অনেক দেশে প্রতি বছরই অনেক ট্যুরিস্ট ভ্রমন করতে যান। অনেক সময় তারা পাহারের মাঝে অনেক গুহা পরিদর্শনেই গিয়ে থাকেন । তাদের পাশাপাশি এসব দেশের খনিতে কর্মরত কোন শ্রমিক, কোন ভাবে আক্রান্ত কোন প্রাণীর বর্জ্যের সংস্পর্শে এসেও ইবোলা এবং মার্বুগ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে, কারণ এসব ক্ষেত্রে আক্রান্ত হবার সম্ভাব্যতা অনেক বেশী । আক্রান্ত ব্যাক্তির অসুখের লক্ষণ প্রকাশ করতে যেটুকু দেরী হয়ে থাকে তার মধ্যেই অথবা  অসুস্থ হওয়ার পরে তার পরিচর্যায় অথবা এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত ব্যক্তির দেহ সৎকারে সাধারনত পরিবার–পরিজন বা আত্মীয়সজনই করে থাকেন। এভাবেই ধীরে ধীরে একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে খুব দ্রুতই বংশ বিস্তার করে ফেলে ভাইরাসটি । আফ্রিকার অনেক দেশই দরিদ্র হওয়ায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলোতে অনেক সময় একই সূচ ও সিরিঞ্জ একাধিক বার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসময় ঠিকমতন জীবাণুমুক্ত করে না নেওয়ার ফলেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে এক থেকে একাধিক মানবদেহে।

এ ভাইরাসের উপসর্গ ইবোলা হেমোরেজিক ফিভার বা শুধু ইবোলা নামেই  (Ebola Hemorrhagic Fever বা সংক্ষেপে EHF ) সমধিক পরিচিত। সাধারণতঃ লক্ষণগুলি ধরা পড়ে ভাইরাস সংক্রমণের দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর । ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে নিরীহ ফ্লু’র মতো হালকা জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, পেশীর ব্যথা, শরীর ব্যথা অনুভব করে। সাধারণতঃ এর পর গা গোলানো, বমি, এবং ডায়েরিয়া হয়, সাথে লিভার ও কিডনীর কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। এই জায়গাতে এসে কিছু মানুষের রক্তপাতজনিত সমস্যা শুরু হয়। কিছুদিন পর তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা, ত্বকে ফোস্কার মতন উঠা, কোন ক্ষেত্রে মুখে ঘা এবং মারাত্মক বমি শুরু হতে পারে। ভয়াবহ এই ভাইরাসটি মানবদেহে আক্রান্ত হবার পরে চূড়ান্ত পর্যায়ে দেহের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক রক্তপাত ঘটায়। লিভার,  কিডনি সহ আরো অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া অকেজো করে দেয়, রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন কমিয়ে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত করে, যার ফলে শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু  ঘটে।

ইবোলা আক্রান্ত হবার পরে বিভিন্ন উপসর্গ

ইবোলা আক্রান্ত হবার পরে বিভিন্ন উপসর্গ

ইবোলা ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশের পর ২ দিন থেকে প্রায় ৩ সপ্তাহ কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করেই অবস্থান করতে পারে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি এই রোগ নিয়ে চলে যেতে পারেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। আর সেখানে রোগটি ছড়িয়ে দিতে পারেন নিজের অজান্তেই। তাই কারো উপরোক্ত কোনো উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে । রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস, কলেরা বা অন্য কোনো রোগের জীবাণুর কারণে হচ্ছে  নাকি ভাইরাল আরএনএ বা কোন ভাইরাল অ্যান্টিবডির কারণে হচ্ছে।

রোগনিরূপণ করার জন্য সাধারণতঃ একই প্রকার লক্ষণযুক্ত অন্যান্য রোগ, যেমন, ম্যালেরিয়া, কলেরা এবং অন্যান্য ভাইরাল হেমোরেজিক ফিভারগুলিকে বাদ দিতে হয়। রোগনিরূপণকে নিশ্চিত করতে রক্তের নমুনাগুলির পরীক্ষা ভাইরাল অ্যান্টিবডি, ভাইরাল RNA, অথবা এই ভাইরাসটির জন্যই করতে হবে। ভাইরাসটির খুব একটা কার্যকরী কোনো প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। নেই কোনো প্রতিষেধক টিকাও। এখন পর্যন্ত যে ভ্যাক্সিন আবিস্কার করা হয়েছে তা কিছু প্রাণীর দেহে কার্যকর হলেও মানবদেহের জন্য তা উপযোগী নয়।  এই রোগের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই; আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করতে হয় ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি (পান করার জন্য সামান্য মিষ্টি ও নোনতা জল) দিয়ে নয়তো ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইডদেওয়া হয়। এই রোগে মৃত্যু হার অত্যন্ত বেশি: প্রায়শ এই ভাইরাস আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ । এ ভাইরাসের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সংক্রমিত হলে এই রোগের লক্ষণগুলো অন্য আরও অনেকগুলো রোগের লক্ষণের সাথে মিলে যায়! ফলে রোগ শনাক্ত করতে সময় লেগে যায়। তাই সঠিক রোগ শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়াটাও অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ! তবে যদি রোগ দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা যায় এবং সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া যায় তাহলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় ।

রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আক্রান্ত বানর ও শূকরের থেকে মানুষের মধ্যে রোগ ছড়ানো হ্রাস হওয়া দরকার। রোগ ধরা পড়লে এইরকম সংক্রমিত প্রাণীদের চিহ্নিত করে মেরে ফেলে দেহগুলি সঠিকভাবে বিনষ্ট করে ফেলার মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে। সঠিকভাবে রান্না হওয়া মাংস এবং মাংস নিয়ে কাজ করার সময় প্রতিরোধী পরিচ্ছদ পরা সহায়ক হতে পারে, একইভাবে যখন রোগগ্রস্ত কেউ কাছাকাছি থাকে তখন প্রতিরোধী পরিচ্ছদ পরা এবং ভালোমতন হাত ধোয়া প্রয়োজন। রোগগ্রস্ত ব্যক্তির শরীর এর যেকোন ফ্লুইড এবং কোষকলার নমুনা বিশেষ সতর্কতার সাথে নাড়াচাড়া করতে হবে। ইবোলা বায়ুবাহিত রোগ নয় কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে রক্ত, লালা, ডায়রিয়া, বমি, পানি ইত্যাদির স্পর্শে এটি অন্যের দেহে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে ক্রমাগতভাবে রক্তক্ষরণ হয়। ডায়রিয়া ও বমিতে রক্তপাত হয়ে থাকে। নাক, মুখ এবং জননেন্দ্রীয়ের মাধ্যমে রক্তক্ষরণ হয়। এসকল তরল অত্যন্ত সংক্রমণীয় যা খেয়াল রাখা উচিত সব সময়। আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে না আসলে এই রোগে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা কম । চিকিৎসা করার ক্ষেত্রেও আগে যথাযথ ভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করে অগ্রসর হওয়া উচিত ।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ভাইরাস নিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী । আক্রান্ত অনেক দেশ থেকেই প্রবাসীরা কোন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই দেশে চলে আসছেন । এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত, পাশাপাশি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন । এছাড়া দেশের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত ডাক্তার এবং নার্সদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা এবং দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন ।

Md. A. K .S. Meer
meer200m@uregina.ca

তথ্যসুত্রঃ

১। http://en.wikipedia.org/wiki/Ebola_virus

২। http://en.wikipedia.org/wiki/Ebola_virus_disease

৩।http://www.cbc.ca/news/world/ebola-outbreak-judge-rejects-maine-bid-to-quarantine-nurse-kaci-hickox-1.2819529

৪। http://www.bbc.com/news/world-us-canada-29836550

৫। http://www.bbc.com/news/world-africa-28754546

৬।http://i4.mirror.co.uk/incoming/article3944886.ece/alternates/s615/ebola-graphic.jpg

৭।http://www.trbimg.com/img-53dc5d5c/turbine/la-sci-g-ebola-patients-transmission-20140801/550/16×9

৮।http://www.thehindu.com/news/cities/Delhi/delhi-passenger-tests-negative-for-ebola-virus/article6298095.ece

৯। http://media.treehugger.com/assets/images/2011/10/gorilla_bushmeat_468.jpg

১০।http://1.bp.blogspot.com/nVZ3u9rq01Q/U9nXSXbGYAI/AAAAAAAAJIo/MLDtazoZPvA/s1600/bushy.jpg

১১। http://www.cdc.gov/vhf/ebola/images/EBOLA_ecology_800px.jpg

The post ইবোলা- প্রয়োজন সাবধানতার appeared first on NSSB.

মাছরাঙ্গা

$
0
0

-মহসিন খান তৌহিদ

নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। এই দেশে জালের মত ছরিয়ে আছে নদী। এই নদীমাতৃক দেশের অতি পরিচিত একটি প্রজাতির পাখি হচ্ছে মাছরাঙ্গা। আমাদের দেশে এই পর্যন্ত ১১ প্রজাতির মাছরাঙ্গা এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই পাখি গুলো প্রধানত নদী,পুকুর,বিল অথবা ডোবার আশে পাশে বেশি দেখা যায়।

1

আমাদের দেশের দক্ষিণের সুন্দরবন,চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার এ এই ১১ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য অঞ্চলে শুধু মাত্র ৪ ধরনের মাছরাঙ্গা এর সন্ধান পাওয়া যায়।

2এরা হচ্ছে Common Kingfisher(ছোট মাছরাঙ্গা), White-throated Kingfisher(সাদা বুক মাছরাঙ্গা), Strork-billed Kingfisher(মেঘ-হও মাছরাঙ্গা), Pied Kingfisher(পাকড়া মাছরাঙ্গা)।

এছাড়াও আরেকটি প্রজাতির মাছরাঙ্গা রয়েছে যা সুন্দরবন ছাড়াও দেশের কিছু অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায় যায় নাম Blue-Eared Kingfisher(নিলাভ কান মাছরাঙ্গা). রঙ্গিন বর্ণের এই পাখি গুলোর মূল খাবার হচ্ছে মাছ। এদের মাছ ধরে খাওয়ার দৃশ্য অতি চমৎকার। এছাড়াও এরা ব্যাঙ, পোকা এবং বিভিন্ন ধরনের ছোট সরীসৃপ ও খেয়ে থাকে।

3

কিন্তু অতি পরিচিত এই পাখিটি দিন দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। IUCN এর রিপোর্ট অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরের পানি দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় এবং দক্ষিণাঞ্চল দিন দিন প্লাবিত হওয়ায় এদের আবাসস্থল দিন দিন ধ্বংসের পথে, তা ছাড়া পানি দূষণ এবং নদী ভরাট এর ফলেও এরা দিন দিন তাদের আবাসস্থল হারাচ্ছে। তাই এই রঙ্গিন প্রজাতির পাখি গুলোর এর প্রাকৃতিক নিবাস রক্ষায় আমাদের সচেষ্ট হতে হবে।

4

 

The post মাছরাঙ্গা appeared first on NSSB.

পোকা মাকড়ের ভোটাধিকার

$
0
0
ছবিতে বিভিন্ন রঙের ফুল দেখানো হয়েছে। ছবিটি Kaniz Khan আপা কতৃক ধারনকৃত।

ছবিতে বিভিন্ন রঙের ফুল দেখানো হয়েছে। ছবিটি Kaniz Khan কর্তৃক  ধারনকৃত।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন বিকাল প্রায় ৫ টা কোন অবস্থাতেই সময় কাটছিল না ভাবলাম যেহেতু কাছাকাছি আছি একটু বোটানিক্যাল গার্ডেনে পায়চারি করে আসি। যথারীতি পায়ে হেটে যাত্রা শুরু করলাম ন্যাশনাল হার্বেরিয়ামের সামনে যেতেই কয়েকজন পথ শিশুর খেলা দেখে থমকে দাঁড়ালাম ওরা মার্বেল খেলছে সাথে পাশের দুটি বালক “খোকার প্রশ্ন” কবিতাটি আবৃত্তি করছে। মনোযোগ দিয়ে কবিতাটির আবৃত্তি শুনে আমি আপ্লুত কারণ এইসব পথ শিশুদের যেমনি নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ঠিক তেমনি নেই পুষ্টিকর খাদ্য,বস্ত্র ও বাসস্থান তবু এদের কণ্ঠে আবৃত্তির ধরন আমায় মুগ্ধ করেছে। পুনরায় আবৃত্তি করার অনুরোধ জানিয়ে পাশের দোকান থেকে ক’টি চকোলেট ও ২লিটার মিরিন্ডা উপহার দিয়ে আমি চলে গেলাম।

আচ্ছা মাগো বল দেখি,
রাত্রি কেন কালো।
সূর্যি মামা কোথায়
থেকে,
পেলেন এমন আলো।
ফুলগুলি সব নানান
রঙের,
কেমন করে হয়।
পাতাগুলি সবুজ কেন,
ফুলের মত নয়।
চিনি কেন মিষ্টি এত,
তেঁতুল কেন টক।……

ধীর গতিতে হাঁটছি এমন সময় দেখা হল বোটানিক্যাল গার্ডেনের মালী রফিক ভাই এর সাথে সে আমাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলো স্যার কেমন আছেন কিন্তু তাকে বেশী পাত্তা দিতে পারলাম না কারণ কানে শুধুই কবিতার দু’টো চরণ বার বার প্রতিধ্বনিত হচ্ছিলো।

ফুলগুলি সব নানান রঙের, কেমন করে হয়।
পাতাগুলি সবুজ কেন,ফুলের মত নয়।

রুয়েলিয়া। ছবিটি ঝিটকা থেকে ধারনকৃত। ছবিটি নবীনগর থেকে ধারনকৃত। মোরগ ঝুটি, ছবিটি নবীনগর থেকে ধারনকৃত। ডবল পাপড়িযুক্ত মধুমঞ্জুরি, ছবিটি মিরপুর BIHS থেকে ধারনকৃত। এই ছবিতে মৌমাছির ভোটাধিকার প্রয়োগ দেখানো হয়েছে। ছবিটি গিলন্ড থেকে ধারনকৃত। রঙ্গন, ছবিটি গিলন্ড থেকে ধারনকৃত।

ফুল কেন বা কিভাবে রঙিন হয়? গোলাপ কেন লাল ও ভায়োলেট ব্লু হয়? আমরা ফুলের রঙে রূপে পরমানন্দ লাভ করি। কিন্তু প্রকৃতির এই রূপ রঙের পিছনে যে বৈজ্ঞানিক কারণগুলি রয়েছে তা সকলের জন্য উন্মোচন করতে চাই। এখানে একটা ব্যাপার বলে রাখা প্রয়োজন মনে করছি তা হল যে কারণে ফুল রঙিন হয় ঠিক সেই একই কারণে একজন মানুষও বাদামী বা কুঁকড়ানো চুল নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে অথবা চোখের রঙ বদলিয়ে ব্লু করেন, রঙিন পোশাক পরিধান করেন কখনো ঠোঁটে লাল লিপস্টিক পরিধান করেন।

ফুলের রঙ উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যেমন দেখা যায় গোলাপের রঙ লাল এবং গাদার রঙ হলুদ হয়ে থাকে। সবই এক ধরনের pigment থেকে পাওয়া যায় যা নির্ধারণ করে উদ্ভিদের বংশগতিয় জিনোম। ফুলের রঙ লাল,গোলাপি,পিঙ্ক, নীল বা পার্পল যাই হোক না কেন এর জন্য প্রধান ভূমিকা পালনকারী পিগমেন্টের নাম হল anthocyanin যা এক প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য যাকে flavanoids বলা হয়। এই ফ্লাভোনয়েডস এর জন্যই এত রঙ এতো ভালোলাগা এতো ভালোবাসা এতো বাহারি ফুলের আগমন ঘটে।

উদ্ভিদে আরও কিছু পিগমেন্ট আছে যেমন carotenoids যাদেরকে টমাটো ও গাজরে পাওয়া যায় যা প্লাস্টিডে হলুদ,লাল ও কমলা রঙ তৈরি করে। ক্লোরোফিল খুবই পরিচিত এক প্রকার পিগমেন্ট যা সব ধরনের বৃক্ষ পত্রাবলীর সবুজ রঙ সরবরাহ করে। এই সব বৈজ্ঞানিক পরিভাষা গুলি মানুষের সাথেও সম্পর্কিত। উদ্ভিদ তাদের জিনে এইসব উল্লেখিত পিগমেন্টগুলি বহন করে যা জন্মের আগেই নির্ধারিত হয় ফুল কি ধরনের রঙ নিয়ে জন্ম লাভ করবে। যেমন একজন মানব শিশু কি রঙের চুল,চোখ ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নিবে তাও জন্মের আগেই নির্ধারিত হয়ে যায় তার পূর্ব পুরুষের জিনে বহন কৃত জিনোমের বৈশিষ্ট্যাবলীর উপর। এখানে উদ্ভিদ বা প্রাণী যাই হোক না কেন জেনিটিক কোড বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

গোলাপ। ছবিটি কানাডা থেকে Tmir Mustafa ভাই কতৃক ধারনকৃত। এলমেন্ডা, ছবিটি আমার ছাদ বাগান থেকে ধারনকৃত প্রভাতজ্যোতি, ছবিটি আমার ছাদ বাগান থেকে ধারনকৃত। টেকোমা, ছবিটি নবীনগর থেকে ধারনকৃত। চালতা, ছবিতে মৌমাছির ভোটাধিকার প্রয়োগ দেখানো হয়েছে। ছবিটি মিরপুর গ্রামীন ব্যাংকের সামনে থেকে ধারনকৃত। পান্ডা ফেস জিঞ্জার

পাখি,বিভিন্ন রকমের পোকা মাকড় ও মৌমাছি এই সকল উজ্জ্বল রঙের মোহে আকৃষ্ট হয় এটা সকলেরই জানা তবু এই প্রবন্ধের বিষয় হিসেবে কিছুটা তুলে ধরতেই হচ্ছে। মানুষ পরস্পরকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন রকমের সাজগোজ করে যেমন কোট,টাই পরিধান করে লিপস্টিক ব্যবহার করে ঠোঁটের রঙ পরিবর্তন করে,বিভিন্ন রকমের সুগন্ধি ব্যবহার করে,চুলের স্টাইলে পরিবর্তন আনে যেন দেখা মাত্রই প্রিয়জন দের পরস্পরকে পছন্দ হয় ঠিক তেমনি উদ্ভিদ তার জিনোমে সংরক্ষিত বৈশিষ্ট্যাবলী দিয়ে চাকচিক্যময় বাহারি ফুল ফুটিয়ে ও বিভিন্ন রকম সুগন্ধ ছড়িয়ে বিভিন্ন প্রকার পাখি, পোকামাকড় ও মৌমাছিদের আকৃষ্ট করে যেন পলিনেটর হিসেবে এরা এসে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটায়।

পরাগায়নের পর আমরা যা পাই ফুল ফল খাদ্য শস্য সবকিছুই আমাদের জীবনধারণের জন্য প্রধান নিয়ামক। ফুল ছাড়া কি আমাদের একদিনও চলে? বিয়ে, জন্মদিন, প্রথম দেখা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান, মৃত্যু কোথায় নেই ফুলের ব্যবহার! আর এই সবকিছুই হয় পোকামাকড়ের ভোটাধিকার প্রয়োগের ফলে। পোকামাকড় ভোটাধিকার প্রয়োগ না করলে পলিনেশন থমকে যাবে, থমকে যাবে আমাদের সভ্যতা। এখন মধুমাস চলছে বিভিন্ন রকমের মৌসুমি ফলের মিষ্টি সুগন্ধ বাতাস ভারি করে তুলছে, এমন সময় কাউকেই খোঁজে পাওয়া যাবে না যে এইসব ফলে রসনা তৃপ্ত করেনি। কিন্তু আমরা কি একবারও ভেবেছি এ সবকিছুই পোকামাকড়ের ভোটাধিকার প্রয়োগের ফসল। পরিশেষে বলা যেতে পারে আমরা বেঁচে আছি পাখি, পোকামাকড় ও মৌমাছি এদের দয়ায়।

 

The post পোকা মাকড়ের ভোটাধিকার appeared first on NSSB.


হিমলকুচি

$
0
0
Blue tiger _mohsin

Blue Tiger || Photo: Mohosin Khan Towhid

লেখা: Sakib Chowdhury Abir

হিমলকুচি (Blue Tiger) নিমফ্যালিডি (Nymphalidae) পরিবারের সদস্য এবং ডানায়িনি উপগোত্রের অন্তর্গত এক প্রজাতির মাঝারি আকারের প্রজাপতি । এটি নীল ডোরা বা নীল বাঘ নামেও পরিচিত । হিমলকুচির বৈজ্ঞানিক নাম Tirumala limniace । এরা যূথচর পরিযায়ী আচরণ করে থাকে ।

এই প্রজাপতির ডানা ও গাত্রবর্ণের রঙ কালো, যেখানে নীলাভ সাদা বিভিন্ন আকৃতির দাগ থাকে । পুরুষ এবং স্ত্রী উভয় প্রকারের প্রজাপতির ডানার দৈর্ঘ্য ৯০-১০০ মিলিমিটার ।

সাধারণত এই জাতীয় প্রজাপতিটি মরু অঞ্চল ও হিমালয়ের অত্যধিক উচ্চতা ছাড়া প্রায় সর্বত্র দেখা যায়, বিশেষত সমভূমিতে । হিমলকুচিরা সচরাচর হালকা জঙ্গল ও অনুচ্চ ঝোপঝাড় ছাওয়া পরিবেশ পছন্দ করে । এরা খাবারের সন্ধানে সমভূমি ও পাহাড়ের ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায় ।

এরা সাধারণত অলস ও ধীর ভঙ্গিতে উড়ে থাকে, কিন্তু শত্রু দ্বারা আক্রমণের শিকার হলে এবং পরিযায়নের সময় দ্রুত এবং শক্তিশালী ভঙ্গিতেও উড়তে পারে ।

Blue tiger_02 Blue tiger_01 Blue tiger_03

হিমলকুচির ডিম চকচকে রূপালি সাদা বর্নের আবার কখনও কখনও হলদেটে বর্নের হয় । দেখতে গম্বুজাকৃতি এবং অল্প লম্বাটে, গায়ে ওপর-নীচে শির টানা ।

শূককীট গুলি লম্বাটে আকারের এবং এদের গায়ে পর পর নীলচে সাদা, কালো ও সবজেটে হলুদ রঙের বেড় দেখা যায় । দেহের তৃতীয় এবং দ্বাদশ খন্ডে দুই জোড়া মাংসল শুঁড় দেখা যায়, যেটি অরা ইচ্ছামত নাড়াতে পারে । এই শূককীটগুলো Heliotropium indicum(হাতিশুঁড়), Asclepius curassivica(মরিচা ফুল), Calotropis gigantean(আকন্দ) এবং Tylophora(টায়লোফোরা) গোত্রের বিভিন্ন উদ্ভিদের পাতার রসালো অংশ আহার করে থাকে ।

মূককীট এর রঙ উজ্জ্বল সবুজ হয় এবং গায়ে সোনালি বিন্দু বিন্দু থাকে । দেহখন্ডের মাঝামাঝি একটা সোনালি বিন্দুর রেখা দেখা যায় ।

বাংলাদেশে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ক্যাম্পাস, নটর ডেম কলেজের ক্যাম্পাস, সীতাকুণ্ড, কাপ্তাই, রাঙামাটি, মধুপুর ইত্যাদি জায়গায় সচরাচর এদের দেখা মিলে । বাংলাদেশের বাইরে পাকিস্তান, পশ্চিমবঙ্গ সহ পুরো ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন, শ্রীলংকা, নেপাল, হংকং এবং ভিয়েতনামে এই প্রজাতির উপস্থিতি রয়েছে ।

তথ্যসূত্রঃ
(১)উইকিপিডিয়া
(২)Butterflies of Bangladesh by Shafique Haider Chowdhury & Monwar Hossain

The post হিমলকুচি appeared first on NSSB.

Striped Tiger

$
0
0
Striped Tiger

Striped Tiger, Photo- Mohosin Khan Towhid

লেখকঃ Sakib Chowdhury Abir

বাঘবল্লা (Striped Tiger) নিমফ্যালিডি (Nymphalidae) পরিবারের সদস্য এবং ডানায়িনি (Danainae) উপগোত্রের অন্তর্গত এক প্রজাতির মাঝারি থেকে বড় আকারের প্রজাপতি যা ডোরাকাটা বাঘ নামেও সমধিক পরিচিত । বাঘবল্লার বৈজ্ঞানিক নাম Danaus genutia

এদের চূড়া বাদে সামনের দুই ডানার ওপরের বাকি অংশ দেখতে বাঘের মতো তাই ডোরাকাটা বাঘ বা বাঘবল্লা বলে নামকরণ করা হয়েছে । এই প্রজাপতির ওপর-পিঠ কমলা রঙের এবং শিরাগুলোর ওপর চওড়া কালো কালো টান দেখা যায়। সামনের ডানার শীর্ষের দিকে কিছুটা কালো জমির ওপর সাদা পটি আছে। এই কালো অঞ্চল সাদা পটি পেরিয়ে উপর দিকে চকোলেট রঙ দেখা যায়। পুরুষ প্রজাপতির নীচের পিঠে ডানার মাঝামাঝি কালো সাদায় মেশানো একটা ছোপ থাকে ।

Striped Tiger

Striped Tiger, Photo: Mohosin Khan Towhid

প্রসারিত অবস্থায় বাঘবল্লার ডানার আকার ৭২-১০০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে । জঙ্গল, ঝোপঝাড়, বাগানসহ যেখানে যেখানে ফুলগাছ জন্মে থাকে সর্বত্রই এদের দেখতে পাওয়া যায় । বাঘবল্লা সাধারণত মাটির মাত্র কয়েক ফুট ওপর দিয়ে ধীর ভঙ্গিতে উড়ে থাকে, যদি না এদের বিরক্ত করা হয় ।

Egg

Egg, Photo- Internet

ডোরাকাটা বাঘের ডিম রূপালী বর্ণের এবং লম্বাটে আকৃতির হয় যার গায়ে লম্বালম্বি খাঁজ কাঁটা থাকে । গাছের পাতার পিছন-পিঠে ডিম দেখা যায় । শূককীট মখমলের মতো কালো বর্ণের। তার ওপর নীলচে সাদা ও হলুদের ছোপ এবং সাদা রেখার বেড় দেখা যায় ।

Lurva

Lurva, Photo- Internet

এই শূককীটগুলো Asclepius curassivica (মরিচা ফুল), Ceropegia intermedia, Vincetoxicum প্রজাতির উদ্ভিদ যেমন- Cynanchum dalhousieae, Cynanchum liukiensis, Marsdenia, Tylophora tenius, Raphistemma pulchellam এবং Asclepiadacea গোত্রের আরও বহু উদ্ভিদের গাছের পাতার রসালো অংশ আহার করে । মূককীট সবুজ রঙের হয়। তার ওপর সোনালি বিন্দু বিন্দু ফুটকি থাকে।

Pupa

Pupa, Photo- Internet

বাংলাদেশের সর্বত্র এই প্রজাতির দেখা মিলে । এর বাইরে সমগ্র ভারতজুড়ে, শ্রীলংকা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, নেপাল, মায়ানমার, দক্ষিণ চীন, জাপান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে এদের বসবাস রয়েছে ।

তথ্যসূত্রঃ
(১) উইকিপিডিয়া
(২) Butterflies of Bangladesh by Shafique Haider Chowdhury & Monwar Hossain

The post Striped Tiger appeared first on NSSB.

গন্ধগোকুল

$
0
0

গন্ধগোকুল (ইংরেজি: Asian palm civet; বৈজ্ঞানিক নাম: Paradoxurus hermaphroditus) ‘সাধারণ বা এশীয় তাল খাটাশ’, ‘ভোন্দর’, ‘নোঙর’,‘সাইরেল’ বা ‘গাছ খাটাশ’ নামে পরিচিত। তালের রস বা তাড়ি পান করে বলে তাড়ি বা টডি বিড়াল নামেও পরিচিত। গন্ধগোকুল বর্তমানে অরক্ষিত প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। পুরোনো গাছ, বন-জঙ্গল কমে যাওয়ায় দিন দিন এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিবেচনায় পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় উঠে এসেছে এই প্রাণীটি। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির গন্ধগোকুলের বাস। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
এরা মাঝারি আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী। নাকের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত ৯২-১১২ সেন্টিমিটার, এর মধ্যে লেজই ৪৪-৫৩ সেন্টিমিটার। লেজের দৈর্ঘ্য ৪৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আকার ৫৩ সেন্টিমিটার। ওজন ২.৪-৫.০ কেজি। স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে গন্ধগ্রন্থি থাকে। গন্ধগোকুলের গাট্টাগোট্টা দেহটি স্থূল ও রুক্ষ বাদামি-ধূসর বা ধূসর-কালো লোমে আবৃত।
গন্ধগোকুল নিশাচর। খাটাশের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে এরাই মানুষের বেশি কাছাকাছি থাকে। দিনের বেলা বড় কোনো গাছের ভূমি সমান্তরাল ডালে লম্বা হয়ে শুয়ে থাকে, লেজটি ঝুলে থাকে নিচের দিকে। মূলত ফলখেকো হলেও কীটপতঙ্গ, শামুক, ডিম-বাচ্চা-পাখি, ছোট প্রাণী, তাল-খেজুরের রসও খায়। অন্য খাদ্যের অভাবে মুরগি-কবুতর ও ফল চুরি করে। এরা ইঁদুর ও ফল-ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের উপকার করে। গন্ধগোকুলের ধূসর রঙের এই প্রাণীটির অন্ধকারে অন্য প্রাণীর গায়ের গন্ধ শুঁকে চিনতে পারার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে।
এশিয়ান গন্ধগোকুল ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয় উপত্যকা, সাবাহ, সারাওয়াক, ব্রুনেই দারুসসালাম, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, চীন, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, জাভা, কালিম্যানতান, বইয়ান ও সিবেরাত এলাকায় স্থানীয়। ইরিয়ান জয়া, লেজার সুন্দ্রা দ্বীপপুঞ্জ, মালুকু, সুলাওজি এবং জাপানে এ প্রাণীর প্রাচীন আবাসস্থল।

তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ
ছবি এবং তথ্য সংগ্রহে : ইসতিয়াক আহমেদ সৈকত

The post গন্ধগোকুল appeared first on NSSB.

মিলিবাগ

$
0
0

যারা গাছপালা পছন্দ করেন তারা নিশ্চয়ই মিলিবাগের সাথে পরিচিত আছেন। এটা একধরনের পোকা যার আক্রমনে উদ্ভিদের অনেক ক্ষতি সাধন হয়। এরা সাধারনত সিস্টের চারিপাশে তুলার মত একটা আবরন তৈরি করে ফলে অনেক রকম পেস্টিসাইড ব্যবহার করেও আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়না।আমরা গাছের পাতায় ও ডালপালায় যে ধরনের মিলিবাগ দেখতে পাই তা হলো স্ত্রী পোকা এরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাফেরা করতে পারেনা। পুরুষ মিলিবাগ উড়ে বেড়াতে পারে সুতরাং এরা গাছের সুবিধা জনক স্থানে বসে স্ত্রী মিলিবাগ কে ক্যামিকেল সিগনাল পাঠিয়ে বলে এখানে প্রচুর খাবার আছে তুমি চলে এসো কিন্তু স্ত্রী মিলিবাগ তখন এই সিগনালে সাড়া দিতে পারে না যেহেতু এরা চলাচলে অক্ষম।

পুরুষ মিলিবাগের এই সিগনাল এক ধরনের কালো পিঁপড়ার এন্টিনায় ধরা পড়ে ও তাৎক্ষনিক ভাবে এরা মিলিবাগের সংষ্পর্শে ছুটে গিয়ে দুজনে সিমবায়োটিক বুঝাপড়া সেরে নেয়। কিছু শর্ত সাপেক্ষে পিঁপড়া বাহক হিসেবে স্ত্রী মিলিবাগকে পুরুষ মিলিবাগের কাছে পৌঁছে দেয়। বিনিময়ে মিলিবাগ খাবার গ্রহন করার পর তাদের মিষ্টি বিষ্ঠা গুলো পিঁপড়াকে ভক্ষন করতে দেয়। এভাবেই চলতে থাকে এদের লাইফ সাইকেল। সুতরাং যেখানেই মিলিবাগের আক্রমন সেখানেই পিঁপড়ার আনাগোনা দেখা যায়।

মিলিবাগের আক্রমন হতে বাঁচতে হলে এর বাহন পিঁপড়া ধ্বংস করতে হবে অথবা এদের যাত্রা পথে ব্যারিকেড দিতে হবে তাহলে আপনার প্রিয় উদ্ভিদকে এদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবেন। এছাড়া মিলিবাগ আক্রান্ত গাছে প্রথম জোরে পানি স্প্রে করে এদের সিস্টের চারপাশে সৃষ্ট তুলার মত আবরন সরিয়ে দিয়ে আধা ঘন্টা পর পেস্টিসাইড স্প্রে করলে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে।

ছবিঃ সংগৃহীত।

লেখকঃ আজহারুল ইসলাম।

The post মিলিবাগ appeared first on NSSB.

বিলুপ্তির পথে চশমাপরা ঽনুমান , চলছে গবেষণা

$
0
0

যুক্তরাজ্যের THE RUFFORD FOUNDATION এর আর্থিক অনুদানে বাংলাদেশের মহাবিপন্ন চশমাপরা  হনুমান নিয়ে  “Status and Conservation Initiative of Phayre’s Langur in Northeast Bangladesh” শিরোনামে  একটি গবেষনা প্রকল্প চলছে সাতছরি জাতীয় উদ্যান, লাউয়াছরা জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, আদমপুর ও জুরি বনে । 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডঃ হাবিবুন নাহারের তত্ত্বাবধানে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি দল “Status and Conservation Initiative of Phayre’s Langur in Northeast Bangladesh” শিরোনামে  একটি গবেষনা প্রকল্প শুরু করেছে ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে। চশমাপরা হনুমানের বর্তমান অবস্থা ও কমে যাওয়ার কারনগুলো জানতে সিলেট বিভাগের সাতছরি জাতীয় উদ্যান, লাউয়াছরা জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, আদমপুর ও জুরি বনে চলছে এই গবেষণা। যুক্তরাজ্যের THE RUFFORD FOUNDATION এর আর্থিক অনুদানে বাংলাদেশের মহাবিপন্ন এই হনুমান নিয়ে অনেকটা ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুরু হওয়া এই গবেষণা প্রকল্পের অনুমতি ও সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছে বাংলাদেশ বন বিভাগ।

প্রকল্পটির প্রধান গবেষক তানভীর আহমেদ বলেন ,  বর্তমানে চশমাপরা হনুমানের সংখ্যা খুব দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ২০১৫ সালে প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইউসিএন থেকে প্রকাশিত লাল তালিকা অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী এই হনুমান “বিপন্ন” এবং বাংলাদেশে “মহাবিপন্ন” অবস্থায় আছে। ধারণা করা হয় যে, আবাস্থল ধংস ও শিকারের কারনে গত তিন প্রজন্মে বা ৩৬ বছরে সারা পৃথিবীতে এই হনুমানের সংখ্যা আগের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং বাংলাদেশে প্রায় ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ১৯৮২ সালে গিটিন্স ও আকন্দের ধারণা মতে বাংলাদেশে চশমাপরা হনুমান ছিল ১৩০০ এর কাছাকাছি। বর্তমানে কি পরিমান টিকে আছে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। উল্লেখ্য এই প্রাণী নিয়ে গবেষণাও আমাদের দেশে অপ্রতুল। ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাউদআর্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলোজিকাল এন্থ্রপোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ ক্রেইগ স্ট্যানফোর্ড বাংলাদেশের মুখপোড়া হনুমান নিয়ে পিএসডি করার সময় মুখপোড়া হনুমানের পাশাপাশি সর্ব প্রথম চশমাপরা হনুমানের “ইকোলজি” নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ “প্রাইমেট কনজারভেসন” জার্নালে লিখেছিলেন। তারপর মাত্র ২ টি গবেষণায় এই হনুমানের ব্যবহারিক ও খাবার বিষয়ক বেশ কিছু তথ্য প্রকাশিত হলেও, বাংলাদেশের কোন বনে কি পরিমান টিকে আছে এবং কি কারনে এই প্রাণীর সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে সে তথ্য গুলো জানতে তেমন কোন গবেষণা হয় নি।

দূর থেকে দেখলে মনে হতে পারে লম্বা লেজওয়ালা কালো বানরের চোখে সাদা ফ্রেমের চশমা পরানো হয়েছে। কাছাকাছি গেলে স্পষ্ট হবে, চোখের চারপাশে সাদা রঙের লোমে আবৃত হয়ে চশমার আকার নিয়েছে। এ জন্যই প্রাণীটির নাম চশমা পরা হনুমান। Primates বর্গের Cercopithecidae  পরিবারভুক্ত  এ হনুমান ইংরেজিতে Phayre’s Leaf Monkey বা Phayre’s Langur নামে পরিচিত। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Trachypithecus phayrei.

বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী বনগুলো, বিশেষ করে লাউয়াছড়া, রেমা-কালেঙ্গা, সাতছড়ি, আদমপুর, জুরি, কাপ্তাই এবং সাঙ্গু সহ বেশ কয়েকটি মিশ্র-চিরহরিৎ বনে মুলত এই হনুমানের বসবাস। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মায়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, লাউস ও ভিয়েতনামে পাওয়া যায় এই হনুমান। বাংলাদেশে যে তিন প্রজাতির হনুমান আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট আকারের হনুমান হচ্ছে এই চশমাপরা হনুমান। শরীরের তুলনায় লেজ লম্বা। শরীরের দৈর্ঘ্য ৫৫ থেকে ৬৫ সেন্টিমিটার এবং লেজের দৈর্ঘ্য ৬৫ থেকে ৮০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা আকৃতিতে পুরুষের থেকে সামান্য বড়, যা সাধারনত এই গোত্রীয় অন্য হনুমানদের মধ্যে খুব কম দেখা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ হনুমানের ওজন গড়ে ৭.৩ কেজি এবং মহিলার ওজন গড়ে ৬.২ কেজি হয়ে থাকে। প্রতি ২ বছরে কেবল একটি বাচ্চার জন্ম দিতে পারে এই প্রাণী। বাচ্চা অবস্থায় শরীরের রং থাকে সোনালি বাদামির মিশ্রণে এবং মুখমণ্ডল গোলাপি। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক হনুমানের শরীর কালচে বাদামি এবং বুকের দিকটা সাদাটে। প্রাপ্তবয়স্ক হতে পুরুষ হনুমানের ৫ থেকে ৬ বছর এবং মহিলা হনুমানের ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগে।

সাধারণত একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ হনুমানের অধীনে ৩ থেকে ২২ জনের একটি দলে মহিলা-পুরুষ একসাথে বসবাস করে এরা। একের অধিক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষও দেখা যায় কিছু দলে। দলপতি পুরুষ বিপদে-আপদে বা অন্য দলের সঙ্গে ঝগড়ার সময় নিজ দলের সদস্যদের রক্ষা করে এবং নিজ দলের বেশীরভাগ মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। পুরুষ দলনেতা অনেক সময় মা হনুমানকে দ্রুত ঋতুমতী করার জন্য বাচ্চাদের মেরে ফেলে। তবে এই অপকর্মটি হয় সাধারণত দলে কোনো নতুন হনুমান দলপতির উত্থান ঘটার সূত্রপাত হলে।

ঘন চিরজবুজ বনের এই বাসিন্দা মুলত নিরামিষভোজী। খাদ্যের ৪৭ শতাংশই বিভিন্ন গাছের পাতা এবং ১৪ শতাংশ ফল ও বীজ। এছাড়া বিভিন্ন গাছের ফুল, পত্রবৃন্ত, কুঁড়ি ও কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। খাদ্য গ্রহনের সময় ও মলের মাধ্যমে গাছের বীজ বনের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পরতে সাহায্য করে এই প্রাণী যা মুলত বনকে নতুন জীবন দান করে। এছাড়া পাতা ও কীটপতঙ্গ খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে একই সাথে পরাগায়নেও ভুমিকা রাখে।

বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে সাতছরিতে বাচ্চাসহ মা হনুমান এবং একইভাবে লাউয়াছরায়ও ১টি চশমাপরা হনুমানের মৃত্যু ঘটে কিছুদিন আগে। বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে আদিবাসীগুষ্টি খাদ্য হিসাবে অন্য প্রাণীর পাশাপাশি চশমাপরা হনুমানও শিকারের ঘটনাও জানা গেছে। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে এই প্রাণীর আবাসস্থল। সুতরাং, জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে মহাবিপন্ন এ প্রানীকে রক্ষা করা বাংলাদেশে অন্তত সম্ভব হবে না।

 

The post বিলুপ্তির পথে চশমাপরা ঽনুমান , চলছে গবেষণা appeared first on NSSB.

মিলিবাগ

$
0
0

মিলিবাগ

– আজহারুল ইসলাম।

মিলিবাগ; ছবিঃ সংগৃহীত।

যারা গাছপালা পছন্দ করেন তারা নিশ্চয়ই মিলিবাগের সাথে পরিচিত আছেন। এটা একধরনের পোকা যার আক্রমনে উদ্ভিদের অনেক ক্ষতি সাধন হয়। এরা সাধারনত সিস্টের চারিপাশে তুলার মত একটা আবরন তৈরি করে ফলে অনেক রকম পেস্টিসাইড ব্যবহার করেও আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়না।

আমরা গাছের পাতায় ও ডালপালায় যে ধরনের মিলিবাগ দেখতে পাই তা হলো স্ত্রী পোকা এরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাফেরা করতে পারেনা। পুরুষ মিলিবাগ উড়ে বেড়াতে পারে সুতরাং এরা গাছের সুবিধা জনক স্থানে বসে স্ত্রী মিলিবাগ কে ক্যামিকেল সিগনাল পাঠিয়ে বলে এখানে প্রচুর খাবার আছে তুমি চলে এসো কিন্তু স্ত্রী মিলিবাগ তখন এই সিগনালে সাড়া দিতে পারে না যেহেতু এরা চলাচলে অক্ষম।

পুরুষ মিলিবাগের এই সিগনাল এক ধরনের কালো পিঁপড়ার এন্টিনায় ধরা পড়ে ও তাৎক্ষনিক ভাবে এরা মিলিবাগের সংষ্পর্শে ছুটে গিয়ে দুজনে সিমবায়োটিক বুঝাপড়া সেরে নেয়। কিছু শর্ত সাপেক্ষে পিঁপড়া বাহক হিসেবে স্ত্রী মিলিবাগকে পুরুষ মিলিবাগের কাছে পৌঁছে দেয়। বিনিময়ে মিলিবাগ খাবার গ্রহন করার পর তাদের মিষ্টি বিষ্ঠা গুলো পিঁপড়াকে ভক্ষন করতে দেয়। এভাবেই চলতে থাকে এদের লাইফ সাইকেল। সুতরাং যেখানেই মিলিবাগের আক্রমন সেখানেই পিঁপড়ার আনাগোনা দেখা যায়।

মিলিবাগের আক্রমন হতে বাঁচতে হলে এর বাহন পিঁপড়া ধ্বংশ করতে হবে অথবা এদের যাত্রা পথে ব্যারিকেড দিতে হবে তাহলে আপনার প্রিয় উদ্ভিদকে এদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবেন। এছাড়া মিলিবাগ আক্রান্ত গাছে প্রথম জোরে পানি স্প্রে করে এদের সিস্টের চারপাশে সৃষ্ট তুলার মত আবরন সরিয়ে দিয়ে আধা ঘন্টা পর পেস্টিসাইড স্প্রে করলে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে।

মিলিবাগ; ছবিঃ সংগৃহীত।

ছবিঃ সংগৃহীত।

 

The post মিলিবাগ appeared first on NSSB.

Bats of Bangladesh

$
0
0

Bats of Bangladesh  
-The Flying Mammals of the Dark

Prof. (Dr.) A N M Aminoor Rahman

Head of the Dept. of Gynecology,
Obstetrics, & Reproductive Health
Director (Outreach Center)
Former Dean, Faculty of Veterinary
Medicine & Animal Science, BSMRAU, Gazipur-1706
E.mail. aminoor69@yahoo.com

Mammals, are the most intelligent vertebrates, which have well-adapted over the last millennia,  distributing over and very successfully inhabiting almost all the habitats of the world, ranging from the Arctic to the Antarctic region. This highly developed chordate have traversed the land, water and sky, inhabiting anywhere of these biomes from the trees to the ocean. Their morphological evolution has allowed them to adopt various methods of locomotion, from flying to swimming and to become arboreal or fossorial, inhabiting the land, fresh water, or marine habitats.

All mammals possess four unique characteristics, like – i. The presence of mammary glands – functional in suckling females but non-functional in others (vestigial in males); ii. The presence of a neo-cortex (a part of brain); iii. The presence of hair all over the body; and iv. The presence of a Pinna (outer part of ear) and three Ossicles in the middle ear (Malleus, Incas, and Stapes). Besides, a few other unique characteristics are found in some mammals but not all. They are warm blooded or endothermic animals (except naked Mole Rat). Their five Species are oviparous (egg-laying, Monotremes), but others are viviparous (give birth to babies) and have a placenta for feeding and growing of the fetus during gestation.

Among the mammals, bats are the only group capable of true flight. With extremely elongated fingers and a wing membrane stretched between, the bat’s wing anatomically resembles the human hand. Out of 5,676 living mammalian Species worldwide bats represent about 22%, with about 1,240 Species. In Bangladesh, out of 129 Species of mammals bats represent 27.9%, with about 36 Species. They are also among the only mammals known to feed on blood. Common misconceptions and fears about bats have led many people to regard them as the creatures of dark and unclean disease carriers. Therefore, bats are always hated and neglected in many countries including Bangladesh. The myths those are known to many countries including our motherland about bats are mostly exaggerated. But they are actually very helpful and performing the vital ecological roles of pollinating flowers and dispersing fruit seeds; many tropical plant Species depend entirely on bats for the distribution of their seeds. They are also controlling the population of crop-destroying insects.

Bats are mammals of the order Chiroptera. The word Chiroptera derived from the ancient Greek word cheir means “hand” and pteron means “wing”, which means their forelimbs form webbed wings, making them the only mammals, naturally capable of true and sustained flight. In contrast, some other mammals can also occasionally fly, like the gliding of Opossums for a short distance. Bats do not flap their entire forelimb like birds, instead they flap their spread-out digits, which are very long and covered with a thin membrane, Patagium. The Chiroptera is divided into two sub-orders: 1) Macro-chiroptera, popularly known as Megabats, which are less specialized and largely fruit-eating, commonly known as flying fox, and 2) Micro-chiroptera, popularly known as Microbats, which are highly specialized and echo-locating bats. Megabats tend to be larger than microbats, but some microbats are actually larger than some megabats. About 70% of bat Species are insectivores and most of the rest are frugivores (fruit eaters). A few Species, such as the fish-eating bat, feed from animals other than insects, along with Vampire bats, which are haemato-phagous (feeding on blood).

The largest Species of bat is the Giant Golden-crowned Flying Fox with a weight up to 1.6 kilogram (kg) and wingspan up to 1.7 meter (m). The smallest bat in the world is the Kitti’s Hog-nosed bat which is only 30-40 millimeter (mm) long, 15 mm wingspan and weight is only 2.0-2.6 gram (g). It is also the smallest mammals of the world with the Etruscan Shrew being the other contender. Out of 35 known Species of bats in Bangladesh, Flying Fox (Pteropus giganteus) is the largest which is 23-25 centimeter (cm) long. Its wingspan is 1.2-1.5 m and weight is 0.6-1.6 kg. On the other hand, Least Leaf-nosed Bat (Hipposideros cineraceous) is the smallest bat as well as mammals of Bangladesh which is only 3.7 cm long.

Bats live all over the globe, with the exception of extremely cold regions. They mostly prefer warmer areas that are closer to the equator, and can be found in rain forests, mountains, farmland, woods, and cities. Bats have two strategies for weathering the cold. Some migrate to warmer areas, while others go into torpor. In this short-term form of hibernation, a bat reduces its metabolic rate, lowers its body temperature, and slows its breathing and heart rate. Except their ecological roles bats are economically important, as they consume insect pests, reducing the need for pesticides. They live in crevices, tree hollows, furrows in rocks and walls, caves, abandoned buildings, under the bridges and road culverts, large trees and old wells. Under each roosting place there are usually be a pile of droppings that stink. The same roost is used for ages’ unless disturbed. Bats live together in groups called colonies, which contain 100-1,000 or more bats. They are also nocturnal, meaning that they sleep during the day and are awake at night. Some may fly up to 50 kilometers (km) to find food during their nightly journeys. In the day, they sleep upside down from trees or the roofs of caves, holding on with their sharp claws.

Bats have a keen sense of smell and sound. All fruit bats except the Egyptian Fruit Bat use the sense of smell and vision for locating food and shelter while all the insect bats and the Egyptian Fruit Bat use echolocation. The nose of many Species has become modified and works as a sensory organ. Echolocation is a remarkable phenomenon in the animal world. Insect bats have a perfect mechanism of echolocation. The insect bats produce high frequency, supersonic sound waves through the mouth or the nostrils. The Egyptian Fruit Bat produces the sound with the help of the tongue. These sound waves hit objects such as the prey or obstacles and will rebound as echoes that are picked up by the bat ears. Insect bats have an acute sense of hearing.

Most bats eat flowers, fruits, nectar, pollen, leaves, and different types of small insects, though it depends on the type of bat. Megabats usually eat fruits, and microbats generally eat insects. The Malayan Flying Fox has a big appetite. It can eat half its body weight every day. The Vampire Bat outdoes even that, though, eating twice its weight in one day. The Brown Bat can eat up to 1,000 small insects in an hour. Some bats will squeeze fruits in their mouths and drink the juices. Vampire Bats like a juice of a different type, though. They do indeed drink blood, mainly from cattle and deer, but they don’t suck blood, like the legends say. Rather, they make a V-shaped cut and then lick up the blood.

Bats have some unique mating behaviors not seen in other animals. Male and female bats meet in hibernation sites, called hibernacula, where they breed. Bats ‘swarm’ around in huge numbers, chasing each other and performing spectacular aerobatics. It’s not clear how the bats choose their mates, but it may be that females seek out the most agile males. During the swarming event, breeding pairs go off to secluded spots in the cave to mate in private.  A pregnant female carry her offspring for a gestation period of 40 days to 6 months. Then, she gives birth to one offspring, called a pup. The pup usually weigh about one-fourth as much as its mother at birth. Soon after birth the offspring crawls up the mother’s body till it reaches one of the two pectoral nipples; it hold on to the nipple till the time of weaning. All baby teeth are of the same size and used just for getting a good grip on to a teat. Young bats drink milk from their mothers to survive, much like other mammals. The mothers and pups stay in groups, separate from the males. The other mothers help take care of the pup until it is old enough to care for itself.

The classification or taxonomy of bats, according to the Integrated Taxonomic Information System (ITIS), is therefore:

  • Kingdom: Animalia
  • Phylum: Chordata
  • Subphylum: Vertebrata
  • Class: Mammalia
  • Order: Chiroptera
  • Suborder: Macrochiroptera, Microchiroptera
  • Family: There are 16 families in the suborder Microchiroptera, and only one in Macrochiroptera: Pteropodidae, which includes flying foxes and Old World fruit bats.
  • Genera: There are 187 genera of bats.
  • Species: There are more than 950, and perhaps as many as 1,240 Species of bats.

Bats constitute the largest mammalian community in Bangladesh; however, till today little population data on fruit bats is available while data on population of other insectivorous bats is very scanty. Some of the bat Species found in Bangladesh is described below:

  1. Flying Fox (Pteropus giganteus, Family: Pteropodidae):

Also known as Indian Flying Fox, Indian Fruit Bat or Greater Indian Fruit Bat. Bangla name is Boro Badur, Badur, or Chompa Badur. Body length 23-25 cm, has no tail, wingspan 0.6-1.6 m and weight 1.2-1.5 kg. This is the biggest and most conspicuous of all bats found in the country. Head is deep chestnut-brown, neck and back are chestnut-brown, and belly is dark yellow-brown. Wings are huge and black with a long claw in the first digit of forearm. Feet are large with claws in all five digits. Long ears are black. Flying Foxes are nocturnal and crepuscular and live in colonies of hundreds or thousands of individuals. Diet consists of fruit juices like litchi, mango, guava, fig etc. They mainly roost in large trees such as banyan, fig, tamarind etc. Breeds year round; mating occurs from July to Oc­to­ber and births take place from Feb­ru­ary to May. They are polyg­y­nan­drous that is female mate with different males. After 140-150 days of gestation female gives birth to 1-2 offspring. Young become mature after 1.5 years. Lifespan is up to 31 years in captivity. Flying fox is very common and is widely distributed throughout the country in all types of habitat.

  1. Fulvous Fruit Bat (Rousettus leschenaultia, Family: Pteropodidae):

Also known as Leschenault’s rousette. Bangla name is Kolabadur or Tamatey Kolabadur. Length 10-11 cm and weight 60-100 g. Newborn weigh only 12 g. Fur on the upper part of the body is fulvous-brown and in the under part is gray or grayish-brown. Long hairs are seen on chin and neck. Rest of the body fur is short and sparse. They are nocturnal and lives in colonies of 2-3 thousands or more individuals. Diet includes different types of fruits including banana. Day time roosts include caves, deserted buildings, disused tunnels etc. Information on breeding is scanty, but may breed 1-2 times a year. Young weaned in 35-40 days. Female and male may attain sexual maturity in five and fifteen months, respectively. Lifespan is not known. They are common and distributed almost throughout the country including the Sundarbans.

  1. Short-nosed Fruit Bat (Cynopterus sphinx, Family: Pteropodidae):

Also known as Greater Short-nosed Fruit Bat. Bangla name is Boncha Kola Badur, Boro Boncha Kola Badur, Boncha Nak Kola Badur or Boro Boncha Nak Kola Badur. Body length 10 cm, wingspan 48 cm and weigh only 63.5 g. Newborn is 13.5 g with a wingspan of 24 cm. This medium-sized bat has a rela­tively long snout. Fur is very fine and silky. Upper part of the body is bright orange or brown to grey-brown with paler un­der ­part. Juveniles are lighter than adults. They are nocturnal and crepuscular. Diurnal roosts include tents made by males with leaves and stems, the underside of palm leaves, the crevices of banyan, peepul, palm or coconut tree etc. Their diet includes fruits mainly banana, guava and mahua; but also eat flowers and leaves. They live in agricultural lands to forested regions, grasslands, or mangroves. They breeds twice a year; mainly during February to March and August to September. After 3-5 months of gestation, female give births to a single offspring. Female become sexually matures in 5-6 months and male in a year. Lifespan is up to ten years in captivity. They are common and widely distributed throughout the country in diverse habitat.

  1. Lesser Mouse-tailed Bat (Rhinopoma hardwickii, Rhinopomatidae):

Also known as Hardwicke’s Lesser Mouse-tailed Bat, Lesser Rat-tailed Bat or Long-tailed Bat. Bangla name is Choto Indurleji Chamchika or Choto Indur Leja Badur. This is a small bat with a very long, mouse-like tail. Body length is 6.2-7.1 cm, tail 5.7-7.0 cm and weight 6-14 g. The fur is usually brown-gray, tending towards darker brown on the back and lighter grey on the underside. Face is furless with black eyes and a flat, thin snout. Ears are large in proportion to the head. The long, thin tail is only partially enclosed within a flap of skin, known as the tail membrane. These nocturnal and crepuscular bats roosts both in small (4-10) and large (up to 500) groups and eats mainly insects, especially beetles, moths etc. They live in hot and dry climate. Roosting sites include dry scrub, rocky areas, caves, abandoned buildings, wells etc. Breeds between February to April and after 95-100 days of gestation female give births to one offspring. Lactation last for 20 days and young can fly in 5-6 weeks. Male and female become mature, respectively, in 16-17 and 8.5-9.0 months of age. This rare Species is known to be found in Chattogram hill tracts and Khulna division including the Sunderbans. However, IUCN Bangladesh (2015) considered this as a Data Deficient Species.

  1. Long-winged Tomb Bat (Taphozous longimanus, Emballonuridae):

Also known as Seath-tailed Bat. Bangla name is Lomba Dana Minar Chamchika or Thole Chamchika. Body length 7-9 cm, tail 2-3 cm and wingspan 40 cm. Female is larger than male. Fur is short, dense, and soft. Upper part is reddish-brown and under part is paler. Females are darker and juveniles are gray. Wings are narrow and dark brown. Males have well developed gular sacs. Ears stand straight. The Species is nocturnal and crepuscular. Except breeding season, male and female live in different unisexual colonies from 1-20 individuals together. Colonies of females are usually bigger. Diet is mainly insects, especially termites, cockroaches, beetles etc. Can live in different types of habitats and diurnal roosts includes caves, old buildings, wells, hollows in banyan and peepul trees etc. Female give births twice a year. Young are weaned after 4 weeks and become fully mature in 2 months. Previously the Species was only known to occur in St. Martin’s Island. However, IUCN Bangladesh (2015) considered this as a Data Deficient Species.

  1. Greater False Vampire Bat (Megaderma lyra, Megadermatidae):

Also known as Indian False Vampire Bat or False Vampire Bat. Bangla name is Bhuyo Daini Badur, Daini Badur or Daini Chamchika. Body length 6.5-9.5 cm and weight 40-60 g. Upper part is dark slaty-gray and under part is whitish. Broad wings have grayish-black membranes. Large, elongated, and grayish black ears joined two-third of their length. Snout is naked with two oval-shaped nose-leaf. No tail. They are nocturnal and crepuscular. Colony size varies from a single individual to several hundreds. Diet includes insects, moths, frogs, rodents, small birds etc. Diurnal roosts include deserted houses, old buildings, caves, temples, forts, caves etc. Mating takes place between November and January. After 150-160 days of gestation females give birth to one or sometimes two pups from April to June. Males reach sexual maturity by 15 and female by 19 months of age. Lifespan is 5-20 years. They are common, widely distributed throughout the country and presumably has a large population.

  1. Lesser False Vampire Bat (Megaderma spasma, Megadermatidae):

Also known as Lesser False Vampire or Common Asian Ghost Bat. Bangla name is Choto Bhuyo Daini Badur, Daini Badur or Daini Chamchika. Body length is 3.9 cm, wingspan is 30.0 cm and weight is 34 g. The fur is bluish-gray along the back and brown­ish-gray along the un­der­side. Ears are rounded, which are joined at the base. The short tail does not extend outside the membrane. They are nocturnal and crepuscular. Usually found in wet areas. At day time they roost in groups of 3-30 in­di­vid­u­als in hollow trees, caves, old build­ings, any other large, shel­tered struc­ture etc. Although, they are in­sec­ti­vorous; but can eat lizards, small rep­tiles, small ro­dents etc. Mat­ing sea­son is from No­vem­ber to Jan­u­ary. After 150-160 days of gestation usu­ally one, rarely two offspring are born be­tween April and June. This rare bat Species is recorded from forested areas of Khulna division including the Sunderbans. However, IUCN Bangladesh (2015) considered this as a Data Deficient Species.

  1. Intermediate Leaf-nosed Bat (Hipposideros larvatus, Hipposideridae):

Also known as Intermediate Round-leaf Bat or Horsefield’s Leaf-nosed Bat that belongs to family. Bangla name is Majhari Pata Nak Chamchika. Body length 7.5 cm, tail 4.3 cm and weight 17.4-24.8 g. The diagnostic feature of this Species is the three lateral accessory leaflets on each side of the nose-leaf. Fur colour is dark gray-brown or reddish-brown, and the ears and nose-leaf are dark gray or brown. Ears are broad and roughly triangular in shape. They are nocturnal and crepuscular. Colony may contain several hundred bats, often shares their roosts with other bat Species. Mainly eat beetles, but can also take moths, butterflies, flies, mosquitoes, termites and other insects. Diurnal roosting place includes caves, abandoned mines, rock crevices, culverts, old buildings etc. Nothing is known about their breeding and lifespan. They are uncommon and found in mixed evergreen forests of Sylhet and Chattogram divisions; also recorded from Netrokona District.

  1. Painted Woolly Bat (Kerivoula picta, Family: Vespertillionidae):

Also known as Painted Bat. Bangla Name is Rongin Chamchika or Komola-badami Chamchika. Body length is 3.1-5.7 cm, tail is 3.2-5.5 cm, wingspan is 18-30 cm and weight is 5 g. It is relatively a small bat. Body hairs are long, wooly and dense and colour is bright orange or scarlet with black wings and orange along the fingers. Naked ears are relatively large with rounded tips. Muzzle is very hairy with naked nostrils. Older males are brighter than females. They are nocturnal and crepuscular. Gen­er­ally fly in cir­cles close to the ground with a weak, flut­ter­ing flight. They are found in homestead, banana plantations etc. Roost singly, in pairs or in groups of only 2-6. Often roosts in tree hol­lows and trunks, fo­liage, huts, build­ings, even weaver or sunbird nests. Eat small insects. Although not much known about reproduction and lifespan, however, they have nuclear family units- that is, a mother, a father, and young. Breeds between June to August. Female give birth to a single offspring. This uncommon bat is distributed throughout the forested areas, especially Dhaka Division, of Bangladesh. However, IUCN Bangladesh (2015) considered this as a Data Deficient Species.

  1. Coromendal Pipistrelle (Pipistrellus coromendra, Vespertillionidae):

Also known as Indian Pipistrelle or Little Indian Bat. Bangla name is Chamchika, Cham Badur or Khude Chamchika. Body length 3 cm, tail 3 cm, wingspan 19-22 cm and weight 9-13 g.  Coat colour is chocolate-brown at a glance. Wing membrane, face and ears are blackish-brown. Possess fairly dense and short fur. Tip of muzzle are naked. Ears are small, triangular shaped and have blunt tips. Female is larger than male. They are nocturnal and crepuscular. Diurnal roosting places includes crevices between logs, crevices in walls, under the ceilings and roofs of houses, under the bark of big banyan trees, dense vegetation, old buildings etc. Roost solitary or small family groups, sometimes up to 18 individuals. Diet includes flying insects and mosquitoes. Breed 3 times a year. Female usually give births to 2 pups in April, July to August and October to November. They are very common and widely distributed in different habitat type throughout the country.

  1. Asiatic Yellow Bat (Scotophilus heathii, Family: Vespertillionidae):

Also known as Asiatic Greater House Bat, Greater Asiatic Yellow House Bat, Greater Asiatic Yellow Bat, Common Yellow Bat or Asiatic Greater Yellow House Bat. Bangla name is Boro Holdey Chamchika or Rongila Chamchika. Body is robust with a long tail. Body length 8-9 cm, tail is 5.9 cm, wingspan is 40 cm., and weight is 48-52 g. Adults are yellowish bronze-brown above and bright yellow to reddish below. Wing membrane is blackish brown. Fur is short and dense except on neck. Muzzle is blunt, naked, and dark. Young is dark grayish-brown. They are nocturnal and crepuscular. The Species is a low flyer and flies at a steady speed. They can live in a variety of habitat types, including urban areas. Roost singly or in colonies of up to 50 individuals. Diurnal roosts include crevices and cracks in old buildings, among the leaves and crowns of palms, in hollows of trees and among banana leaves etc. No information is available on their foods. Not much information is available on reproduction, breeding, and lifespan. However, female give births to 1-2 offspring in April to May after 115 days of gestation. They are uncommon and distributed throughout the forested areas of Sylhet and Chattogram division.

  1. Dormer’s Bat (Scotozous dormer, Family: Vespertillionidae):

Also known as Dormer’s Pipistrelle. Bangla name is Dormarer Chamchika or Dormarer Badur. This medium-sized bat’s head-body length is 4.89 cm and tail is 3.53 cm. Upper part is gray-brown with some hair tips almost silver in colour. Under part is paler with all hair tips white or pale buffy-white. Ears, naked areas of face and membranes are uniform mid-brown. The Species is nocturnal and crepuscular. Flies with rapid wings beat, but not a fast flier. They live in dry forests, plantations, rural gardens, urban areas, near human habitations etc. Day time roosts in cracks, crevices, holes in old temples, old disused buildings, holes in large trees etc. Usually roosts in colonies of 2-24 individuals. They are insectivorous; eat beetles, moths, grasshoppers, crickets, winged termites etc. Not much information is available on reproduction. But breeds throughout the year. This Species has been categorized as Least Concern in the view of its wide distribution throughout the country.

Bats provide important ecological services worldwide and are among the most neglected mammals in Bangladesh. For instance, though the fruit bats cause occasional damage to fruits, however, they play major roles in plant pollination, seed dispersal, and forest regeneration, while insectivorous bats control harmful crop insects and serious disease vectors. Excessive exploitation of natural resources, alteration of habitats and cutting down of tall trees have depleted the bat populations in Bangladesh. Therefore, urgent measures should be taken to save the bats from fast decline in Bangladesh. Last remaining roosting trees of the flying fox needs to be saved from cutting by declaring these as national property. Bats in Bangladesh made international news in 2001 when the first outbreak of Nipah virus occurred. In other regions, bats are known to carry other zoonotic diseases such as Ebola, SARS, Hendra and MERS. Risks of bat-related disease outbreaks have increased due to habitat destruction and wildlife trade bringing bats into closer contact with human beings. To safeguard environmental and public health, increased research on bats is needed from ecological, conservation and medical standpoints. According to IUCN Bangladesh (2015) out of 35 Species of bats found in Bangladesh 6 are Near Extinct, 18 are Data Deficient and 11 are List Concern. Natural history and biology of most of the bat Species in Bangladesh is still unknown. Therefore, research should be done to unveil the biology and natural history of bats of Bangladesh. Even there are chances to discover some more new Species of bats in Bangladesh. On the other hand, proper knowledge about bats must be disseminated by the government, NGOs, biologist, and media for their survival and keep the nature balanced. There is also an urgent need for making the public aware about the beneficial aspects of all bats and removing the century-old misconceptions about bats.

 

References:

  1. Bates, P.J.J. & D.L. Harrison (1997). Bats of the Indian Subcontinent. Harrison Zoological Museum, Kent, United Kingdom, xvi+258pp.
  2. Corbet, G.B. & J.E. Hill (1992). The Mammals of the Indomalayan Region: A Systematic Review. Oxford University Press, Oxford, United Kingdom, 488pp.
  3. Francis, C.M. (2008). A Guide to the Mammals of Southeast Asia. Princeton University Press, Princeton, New Jersey, 392pp.
  4. Hasan, M.K., Khan, M.M.H. and Feeroz, M.M. (2014). Amphibians and Reptiles of Bangladesh- A Field Guide. Arannayk Foundation, Dhaka. 191 pp.
  5. Islam, N (2013). A first for bat in Bangladesh. Bats, 31(1):13-14.
  6. Khan, M.A.R. (2001). Status and distribution of bats in Bangladesh with notes on their ecology. Zoos’ Print Journal 16(5): 479–483.
  7. Khan, M.A.R. (2015). Wildlife of Bangladesh: Checklist and Guide. Chayabithi, Dhaka. 568 pp.
  8. Khan, M.M.H. (2008). Photographic Guide to the Wildlife of Bangladesh. Arannyak Foundation, Dhaka. 488pp.
  9. Kruskop S.V. (2013). Bats of Vietnam: Checklist and an Identification Manual. Joint Russian-Vietnamese Science and Technological Tropical Centre, Zoological Museum of Moscow M.V. Lomonosov State University, Moscow, 316pp.
  10. Racey, P.A. (2009). Reproductive assessment in bats, pp. 249–264. In: Kunz, T.H. & S. Parsons (eds.). Ecological and Behavioral Methods for the Study of Bats 2nd Edition. Johns Hopkins University Press, Baltimore, 901pp.
  11. Rahman, A.N.M.A. (2015). Wildlife of Bangladesh, Department of Film & Publication, Ministry of Information, Dhaka, Bangladesh.
  12. Rahman, A.N.M.A. (2017). Bats: The most neglected mammals of Bangladesh. Bangladesh Quarterly, 37(4):55-
  13. Simmons, N.B. (2005). Order Chiroptera, pp. 312–529. In: Wilson, D.E. & D.M. Reeder (eds.). Mammal Species of the World: A Taxonomic and Geographic Reference – 3rd Edition. 1. Johns Hopkins University Press, Baltimore, 1–743pp.
  14. Srinivasulu, C. & B. Srinivasulu (2005). A review of chiropteran diversity of Bangladesh. Bat Net – CCINSA Newsletter 6(2): 5–11.

The post Bats of Bangladesh appeared first on NSSB.


প্রজাপতির বিভিন্ন ধরনের আচরণ

$
0
0

-মোঃ ফিরোজ আহমেদ
অনার্স (প্রাণিবিদ্যা), মার্স্টাস (বন্যপ্রাণিবিদ্যা), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
মার্স্টাস, পরিবেশবিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

সাধারণত গড় প্রাপ্তবয়স্ক প্রজাপতি ২ সপ্তাহের মতো বেঁচে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারতম্য হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক প্রজাতির মূল কাজ হচ্ছে খাওয়া এবং প্রজনন করা। ফিল্ডে গেলে প্রজাপতির আচরণগত যে বিষয়গুলো খুব লক্ষ্যনীয়ঃ

ক) বাস্কিংঃ

প্রজাপতিগুলো শীতল রক্তযুক্ত, মানে তারা তাদের বিপাক প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত তাপ উৎপন্ন করে না বা যতটুকু তাপ উৎপন্ন করে তা তাদের উড়ে যাওয়ার জন্য বা অন্য কাজের জন্য যথেষ্ট নয়। এজন্য প্রজাপতিগুলিকে শক্তির জন্য সূর্য থেকে প্রাপ্ত শক্তির উপর নির্ভর করতে হয়। এজন্য প্রজাপতিগুলোকে  সূর্যের আলোতে পাখা প্রসারিত করে সূর্যের আলো থেকে শক্তি নিতে দেখা যায়। এভাবে তারা নিজেদের দেহের অভ্যন্তরীন তাপমাত্রা বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রা থেকে বৃদ্ধি করতে পারে। এজন্যই হয়তো প্রজাপতির পাখার রং এতো উজ্জ্ব রঙিন হয়।

Great Zebra, Photo- Feroze Ahmed

Common Silverline, Photo- Feroze Ahmed

 

 

 

 

 

 

 

খ) নেক্টারিংঃ

প্রজাপতিগুলোতে চিবানোর জন্য কোন মুখোপাঙ্গ নেই। এক্ষেত্রে তারা তাদের প্রোবোসিসের মাধ্যমে চুমুক দিয়ে তরল জাতীয় খাবার গ্রহন করে। প্রজাপতি যখন খাবার গ্রহণ করে না তখন তার প্রোবোসিসটি মাথার নিচের দিকে কুঁকড়ানো অবস্থায় থাকে। প্রজাপতি যখন নেক্টারিং এর মাধ্যমে খাবার গ্রহণ করে তখন হাইড্রোস্ট্যাটিক চাপের ফলে কুঁকড়ানো প্রোবোসিসটি প্রসারিত হয় এবং ফুলের গভীর নলগুলোতে প্রবেশের মাধ্যমে পুষ্টি গ্রহণ করে।

কিছুকিছু প্রজাপতি যেমন রেইন ফরেষ্ট এরিয়াতে পাওয়া যায়, যেখানে নেক্টারিং প্ল্যান্ট কম পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে প্রজাপতিগুলো বনের মেঝেতে পড়ে থাকা পচে যাওয়া ফলগুলো হতে পুষ্টিদ্রব্য গ্রহণ করে। বিশেষ করে Nymphalidae পরিবারের কিছু জেনাসের প্রজাপতির মধ্যে এরুপ বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Common Leopard, Photo- Feroze Ahmed

Indian Grizzled skipper, Photo- Feroze Ahmed

 

 

 

 

 

 

 

গ) পাডলিংঃ

পাডলিং পুরুষ প্রজাপতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে পুরুষ প্রজাপতিগুলো ভেজা মাটি বা ভেজা বালি হতে তরল পুষ্টিদ্রব্য গ্রহণ করে। যে পানিযুক্ত স্থানে প্রজাপতিগুলো পাডলিং করে সেখান থেকে পানির সাথে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল/সল্ট গ্রহণ করে, যা পুরুষ প্রজাপতিগুলোর ফার্টিলিটি/উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

Tailless Lineblue, Photo- Feroze Ahmed

Common Tit, Photo- Feroze Ahmed

 

 

 

 

 

 

 

ঘ) প্রজননঃ

প্রজনন প্রজাপতির একটি স্বাভাবিক এবং সাধারণ বৈশিষ্ট্য। প্রজননের আগে পুরুষ প্রজাপতি একটি নির্দিষ্ট এরিয়া বেছে নেয় এবং স্ত্রী প্রজাপতিকে আকর্ষন/ মেটিং করার জন্য ফেরোমেন হরমোন নিঃসৃত করে। স্ত্রী প্রজাপতি ফেরোমেন দ্বারা আকৃষ্ট হলে তারা কোর্টশিপে অংশগ্রহণ করে। এরপর যখন তারা প্রজননে অংশগ্রহণ করেন, শুরুতে পুরুষ প্রজাপতি পেটের দিকে থাকা classping organ এর সাহায্যে স্ত্রী প্রজাপতিকে সহজে আঁকড়ে ধরে। এরকম অবস্থায় তারা এক ঘন্টা বা তার বেশি অথবা সারা রাত ব্যাপী থাকতে পারে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরুষ প্রজাপতি থেকে শুক্রানু স্ত্রী প্রজাপতিতে স্থানান্তরিত হয়। শুকানু স্ত্রী প্রজাতির ডিম্ব থলিতে প্রবেশের পর সেখানেই নিষিক্ত হয়। পবের্তীতে স্ত্রী প্রজাপতি তাদের হোস্ট প্ল্যান্ট এ ডিম পাড়ে। এরপর ডিম একটি পরিপূর্ণ জীবনচক্রের মাধ্যমে লার্ভা (শুয়োপোকা/শূককীট), লার্ভা থেকে পিউপা (গুটিপোকা/মূককীট)এবং পিউপা থেকে একটি পুর্নাঙ্গ প্রজাপতিতে রূপান্তরিত হয়।

Common Grass Yellow, Photo- Feroze Ahmed

Common Jay, Photo- Feroze Ahmed

 

 

 

 

 

 

 

 

রেফারেন্স : www.butterflyschool.org

The post প্রজাপতির বিভিন্ন ধরনের আচরণ appeared first on NSSB.

প্রজাপতির জীবনচক্র

$
0
0

মোঃ ফিরোজ আহমেদ
অনার্স (প্রাণিবিদ্যা), মার্স্টাস (বন্যপ্রাণিবিদ্যা) – জগন্নাথ বিশ্বিবিদ্যালয়
মার্স্টাস (পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা) – জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিবিদ্যালয়

মানুষের মতো প্রজাপতিরা একলিঙ্গ প্রাণী, অর্থাৎ তাদের পুরুষ ও স্ত্রী সদস্য বিদ্যমান, যাদের প্রজননের মাধ্যমে তাদের বংশ বিস্তার হয়ে থাকে। পুরুষ প্রজাতির শুক্রাণু দ্বারা মহিলা প্রজাতির ডিম নিষিক্ত হওয়ার পর মহিলা প্রজাপতি তার হোষ্ট প্ল্যান্টের পাতা, ফুলের কুঁড়ি বা কান্ডে ডিম পাড়ে। এভাবেই প্রজাপতির জীবনচক্র শুরু হয়। প্রজাপতির জীবনচক্র কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রতিটি স্তরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। প্রজাপতির জীবনচক্রে ডিম, শুয়োপোকা বা লার্ভা, পিউপা এবং পুর্নাঙ্গ প্রজাপতি এই চারটি ধাপ পরিলক্ষিত হয়। এ ধরণের জীবনচক্র মেটামরফসিস বা রুপান্তর নামেও পরিচিত। কীটপতঙ্গের জীবনচক্রে মেটামরফসিস সম্পুর্ণ এবং অসম্পুর্ণ – দু’ধরণেরই হতে পারে, যেমন আরশোলা ক্ষেত্রে এটি অসম্পূর্ণ কিন্তু প্রজাপতি ও মথ এর ক্ষেত্রে এটি সম্পুর্ণ মেটামরফসিস হয়ে থাকে।

১. ডিমঃ একটি প্রজাপতি তার জীবন প্রক্রিয়া ডিমের মাধ্যমে শুরু করে। এদের ডিম আকারে খুব ছোট। ডিম আকৃতিতে হতে পারে বৃত্তাকার, ডিম্বাকার বা নলাকার রকমের। প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা প্রজাপতি তাদের হোষ্ট প্ল্যান্টে ডিম পাড়ে। কারণ এই হোষ্ট প্ল্যান্টই ডিম থেকে সৃষ্টি হওয়া শুঁয়োপোকার প্রধান খাবার। প্রজাপতি গ্রীষ্ম, শীত বা বসন্ত যেকোন ঋৃতুতে ডিম দিতে পারে, তবে এটি প্রজাপতির প্রজাতি ভিন্নতার উপর নির্ভর করে। একটি মহিলা প্রজাপতি একসাথে অনেক ডিম দেয়। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিকুলতার পর অল্প সংখ্যকই বেঁচে থাকে।

 

পর্যায়ক্রমিক ছবি (ডিম) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)
২. শুয়োপোকা বা লার্ভাঃ ডিম পরবর্তী স্তরটি হল শুয়োপোকা বা লার্ভা। ডিম ফোটার প্রথমেই শুঁয়োপোকা বা লার্ভাটি ডিমের উপরের অংশটি খেয়ে ফেলে যা থেকে লার্ভাটি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি পায়। শুঁয়োপোকার প্রধান কাজই হল খাদ্য গ্রহণ করা। যে পাতাটিতে প্রজাপতি ডিম পাড়ে, সেটিকেই তারা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, নির্দিষ্ট প্রজাপতি নির্দিষ্ট ধরণের উদ্ভিদ ও পাতা পছন্দ করে। শুঁয়োপোকা তাদের জীবনচক্রের এই পর্যায়ে তাদের আকার ১০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় তাদের ত্বক তথা চামড়ার মোল্টিং বা নির্মোচন হয় এবং তারা আকৃতিতে পর্যায়ক্রমে বড় হতে থাকে।
শুঁয়োপোকা বা লার্ভার বৃদ্ধি সাধারণত ৫ টি পর্যায়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। তবে প্রত্যেক পরিবারের অর্ন্তভুক্ত প্রজাতির ক্ষেত্রে ৫ টি পর্যায় দেখা যায় না। বিশেষভাবে লাইকেনিডি ও রিওডিনিডি পরিবারের বিভিন্ন প্রজাতিতে ৪ টি (চার) পর্যায় বিদ্যমান। প্রত্যেকটি পর্যায়কে ইনস্টার বলা হয়। একটি শুঁয়োপোকা বড় হওয়ার সাথে সাথে এটি ক্রাইসালিস হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ৪/৫ বার খোলস পরিবর্তন করে। নি¤েœাক্ত ইনস্টার ধাপগুলো হল-

ক) প্রথম ইনস্টার
খ) দ্বিতীয় ইনস্টার
গ) তৃতীয় ইনস্টার
ঘ) চতুর্থ ইনস্টার এবং
ঙ) পঞ্চম ইনস্টার

ক) প্রথম ইনস্টারঃ যখন প্রজাপতির লার্ভাটি ডিম থেকে বের হয় তখন আকৃতিতে এটি অনেক ছোট থাকে। এই তরুণ শুঁয়োপোকা বা ক্যাটারপিলারটি প্রথম ইনস্টার নামে পরিচিত। ডিম থেকে বের হওয়ার পর পর (কিছুকিছু প্রজাতি) লার্ভাটি পুষ্টিতে বিদ্যমান ডিমের আস্তরনটি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এরপর এটি তার হোষ্টপ্ল্যান্ট এর কচি পাতাকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এভাবে এটি আকৃতি পরিবর্তনের মাধ্যমে দ্বিতীয় ইনস্টার এর দিকে অগ্রসর হয়।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (প্রথম ইনস্টার) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

খ) দ্বিতীয় ইনস্টারঃ ক্যাটারপিলার বা লার্ভা বড় হতে থাকলে প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে লার্ভার বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের ত্ব্ক বা চামড়া বাড়তে পারে না। লার্ভাটি তার বাইরের ত্বকের অভ্যন্তরে আর একটি নতুন ত্বক তৈরি করতে থাকে। বাইরের ত্বক বা চামড়া খসে পড়লে আরেকটি নতুন ত্বক উন্মুক্ত হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় মোল্টিং। দ্বিতীয় ইনস্টার অবস্থায় লার্ভাটি প্রথম এই মোল্টিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (দ্বিতীয় ইনস্টার) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

গ) তৃতীয় ইনস্টারঃ দ্বিতীয় ইনস্টার ক্যাটারপিলার বা লার্ভা টি প্রতিনিয়ত খাদ্য গ্রহণ করতে থাকে এবং বাড়তে থাকে। লার্ভাটি বড় হতে হতে যখন তার চামড়া বা ত্বক ভেদ করার মুহূর্তে চলে আসে তখন মোল্টিং সম্পন্ন হয়। এই অবস্থায় এটিকে বলা হয় তৃতীয় ইনস্টার।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (তৃতীয় ইনস্টার) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

ঘ) চতুর্থ ইনস্টারঃ তৃতীয় ইনস্টার এর মতো এ স্তরটি প্রায় একই রকম। আকৃতিতে পূর্বের স্তরের চেয়ে একটু ভিন্ন, প্রতিনিয়ত খাদ্য গ্রহণ করার ফলে আকার আকৃতির এই ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (চতুর্থ ইনস্টার) – ১ . কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

ঙ) পঞ্চম ইনস্টারঃ চতুর্থ ইনস্টারে মোল্টিং সম্পন্ন হওয়ার পরে লার্ভাটি পঞ্চম ইনস্টারে প্রবেশ করে। এই স্তরে ক্যাটারপিলারটি আকৃতিতে অনেক বড় হয়।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (পঞ্চম ইনস্টার) -১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৩. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) [ বি. দ্রঃ ডাবল ব্যান্ডেড জুডির ক্ষেত্রে পঞ্চম ইনস্টার দশা বিদ্যমান নয়, তাই এখানে এই দশার কোন ছবি নেই ]

* প্রাক-পিউপাকরণ অবস্থাঃ পিউপা স্তরের পূর্বাবস্থায় এ স্তরটি দেখা যায়। সাধারণত পঞ্চম ইনস্টার এর পর লার্ভাটি পিউপা স্তরে যাওয়ার সময় পিউপাতে পরিণত হওয়ার প্রস্তুতিমূলক পর্ব হচ্ছে প্রাক-পিউপাকরণ অবস্থা।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (প্রাক-পিউপাকরণ অবস্থা) – ১ . কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২.ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

৩. পিউপাঃ পিউপা প্রজাপতির জীবনের অতিমূল্যবান একটি ধাপ। প্রজাপতিগুলো তাদের লার্ভা স্তর অতিক্রম করার শেষ মুহূর্তে আর যখন আকার আকৃতিতে বাড়ে না তখন এটি পিউপা স্তরে পৌছে। এই অবস্থায় এটি ক্রাইসিলিস নামেও পরিচিত। বাইরে থেকে দেখে মনে হতে পারে এটি একটি বিশ্রাম পর্যায়, কিন্তু আসলে তা নয়। ক্যাটারপিলার থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতিতে রুপান্তরিত হওয়ার সমস্ত প্রক্রিয়াই এখানে হয়ে থাকে। প্রজাপতির ডানা, মুখোপাঙ্গের পরিবর্তে প্রোবোসিস, অ্যান্টেনার সম্পুর্ণ রুপান্তর এই ধাপেই হয়।

 

পর্যায়ক্রমিক ছবি (পিউপা) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

* পরিণত পিউপাঃ পিউপা তার প্রাথমিক অবস্থা থেকে যখন পরিণত পিউপাতে পরিণত হয় তখন তার আকার/আকৃতি বা রঙ/বর্ণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

পর্যায়ক্রমিক ছবি (পরিণত পিউপা) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

৪. প্রাপ্তবয়স্ক পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতিঃ ক্রাইসিলিসে গড়ে ১০-১৪ দিন অতিক্রম হওয়ার পর (প্রজাতি ভেদে কম বেশি হতে পারে) নতুন প্রজাপতি বের হওয়ার প্রস্তুতি নেয়। প্রজাপতি যখন ক্রাইসিলিস থেকে উত্থিত হয় তখন এর ডানাগুলো ছোট ও ভেজা থাকে এবং ঐ অবস্থাতে তারা উড়তে পারে না। এক্ষেত্রে এরা তাদের পেট থেকে ডানার শিরাগুলোর মাধ্যমে একধরনের তরল জাতীয় পদার্থ পাম্প করে এবং ডানাগুলো পূর্ণ আকারে প্রসারিত হয়। পরবর্তীতে ভেজা পাখাগুলো ধীরে ধীরে শুকোতে থাকে। কিন্তু প্রজাপতিটি উড়ার পূর্বে কিছুক্ষণ অনুশীলন করে নেয়। সাধারণত তিন থেকে চার ঘন্টার মধ্যে প্রজাপতিটি উড়ার জন্য দক্ষ হয়ে উঠে। পরবর্তীতে একটি পূর্ণাঙ্গ পুরুষ ও মহিলা প্রজাপতি প্রজননে অংশগ্রহণ করে। মহিলা প্রজাপতি তার হোষ্টপ্ল্যান্টে ডিম পাড়ে। এভাবে আবার প্রজাপতিটির নতুন জীবনচক্র শুরু হয়।

 

পর্যায়ক্রমিক ছবি (প্রাপ্ত বয়স্ক পূর্নাঙ্গ প্রজাপতি) – ১. কমন মরমন (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ২. ডাবল ব্যান্ডেড জুডি (মুশফিক আবীর উপন্যাস) ৩. মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব) ৪. স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস (ফাহিম শাহরিয়ার লাবিব)

এখানে মোট চার প্রজাতির প্রজাপতির জীবনচক্র তুলে ধরা হয়েছে। এদের মধ্যে প্যাপিলিয়নিডি পরিবারের কমন মরমন, রিওডিনিডি পরিবারের ডাবল ব্যান্ডেড জুডি এবং পাইরিডি পরিবারের মটেল্ড ইমিগ্রেন্ট এবং স্ট্রাইপড অ্যালবাট্রস।
অনেকসময় লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, একই প্রজাতির বিভিন্ন প্রজাপতি আকৃতিতে সম আকৃতির নয়। এ বিষয়টি সম্পুর্ণরুপে নির্ভর করে লার্ভা বা ক্যাটারপিলারের খাদ্য গ্রহণের উপর। কারণ লার্ভা স্তরটিই প্রজাতির বিকাশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর।
প্রজাপতির জীবনচক্র পর্যবেক্ষণ করে আমরা শিক্ষার্থীরা বা আগ্রহীরা নান জ্ঞান অর্জন করতে পারি। সময়ের সাথে সাথে প্রজাপতির জীবনের বিভিন্ন দশা পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে তার জীবন দশার প্রাথমিক অবস্থা থেকে শুরু করে শেষ ধাপ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা যায়। এ থেকে আমরা তার বিভিন্ন দশার সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য নিরুপন করে অন্য প্রজাতি বা অন্য পতঙ্গের সাথে তুলনামূলক পার্থক্য নিরুপণ করতে পারি। জীবনচক্র পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ দক্ষতা বা ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি। প্রজাপতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এর জীবনচক্র সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রজাপতি সম্পর্কে জানবো, প্রকৃতিতে এদের গুরুত্ব অনুধাবন করবো এবং প্রজাপতি সংরক্ষণে ভুমিকা পালন করবো এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

রেফারেন্সঃ

  1. www.butterflyschool.org
  2. Thebutterflysite.com
  3. Ansp.org
  4. butterflycircle.blogspot.com

The post প্রজাপতির জীবনচক্র appeared first on NSSB.

কেন প্রজাপতি এবং মথ গুরুত্বপূর্ণ ?

$
0
0

মোঃ ফিরোজ আহমেদ
অনার্স (প্রাণিবিদ্যা), মার্স্টাস (বন্যপ্রাণিবিদ্যা) – জগন্নাথ বিশ্বিবিদ্যালয়
মার্স্টাস (পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা) – জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিবিদ্যালয়

প্রজাপতি ও মথ আমাদের এই সবুজ প্রকৃতিকে তাদের উজ্জ্বল ডানার মাধ্যমে আরও রঙিন করে তোলে। তাদের উজ্জ্বল ডানার ঝাপটানি প্রকৃতির সৌর্ন্দযে একটি বিশেষ শোভা প্রদান করেন। প্রজাপতি এবং মথ একটি সুস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সুস্থ্য বাস্তুসংস্থানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরা সন্মিলিতভাবে পরাগায়ণ ও পেষ্ট কন্ট্রোল বা কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রকৃতিতে মূল্যবান ভুমিকা পালন করে। সার্বিকভাবে বিবেচনা করলে প্রজাপতি ও মথের ক্ষেত্রে আমরা নিম্নলিখিত মূল্য বা গুরুত্বগলো অবলোকন করতে পারিঃ

অর্ন্তনিহিত মূল্য (Intrinsic value)
১. প্রজাপতি ও মথ অর্ন্তনিহিতভাবে মুল্যবান এবং প্রকৃতি সংরক্ষণে এদের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে।
২. প্রজাপতি ও মথ হচ্ছে পৃথিবীতে জীবনের একটি অংশ এবং গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
৩. এগুলো প্রায় কমপক্ষে ৫০ মিলিয়ন বছর ধরে বিদ্যমান রয়েছে এবং সম্ভবত দেড় মিলিয়ন বছর আগে প্রথম বিকশিত হয়েছিল।
৪. প্রজাপতি ও মথকে আমরা ফ্ল্যাগশিপ স্পিসিজ বা প্রজাতি হিসাবে আখ্যায়িত করতে পারি, যা পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক ধরণের প্রতিবিম্ব হিসাবে কাজ করে।

সৌন্দর্যগত মূল্য (Aesthetic value)
১. প্রজাপতি ও মথগুলো হচ্ছে আমাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের অংশ এবং ৩০০ বছর ধরে এর অধ্যয়ন করা হচ্ছে।
২. প্রজাপতি ও মথগুলো দেখতে সুন্দর। এগুলো সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি এবং সবার নিকট জনপ্রিয়ও বটে।
৩. এমন কেউ নেই যার প্রজাপতি দেখতে ভালো লাগে না। প্রজাপতি বিশে^র সবচেয়ে সুন্দর পতঙ্গ হিসেবে সকলের নিকট পরিচিত।
৪. সাহিত্যে প্রজাপতি এবং মথের ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেল সহ সেক্সপিয়ারের নাটক,কবিতায় এমনকি অনেক গুণী ব্যক্তির গানের সুরেও প্রজাপতির সৌন্দর্য পরিলক্ষিত হয়।
৫. বিশ^ব্যাপী বিজ্ঞাপনদাতা ও চিত্রকররা তাদের কাজে প্রজাপতিকে প্রকৃতিবান্ধব উপাদান এবং তাদের কাজের অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। কিছু কিছু সংস্কৃতিতে প্রজাপতি সবসময় প্রকৃতির অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, সৌন্দর্য এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

শিক্ষাগত মূল্য (Educational value)
১. প্রজাপতির জীবনচক্র প্রায়ই ছোটদের জন্য শিক্ষন সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শুঁয়োপোকা থেকে পিউপাতে রুপান্তর প্রক্রিয়া প্রকৃতির অন্যতম চমকপ্রদ আশ্চর্য।
২. গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়ে প্রজাপতির ডানার জটিল বিন্যাস সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। এছাড়া প্রজাপতির মাইগ্রেশন বিষয়টিতেও শিক্ষাগত মূল্য রয়েছে।

বৈজ্ঞানিক মূল্য (Scientific value)
১. শতাব্দীকাল ধরে জৈবিক গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, ভ্রƒণ বিদ্যা, বির্বতন বা জেনেটিক্স, জনসংখ্যার গতিশীলতা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ইত্যাদির মত বিষয়গুলোর তদন্ত করার জন্য প্রজাপতি একটি গুরুত্বপূর্ন মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
২. প্রজাপতি অধ্যয়নের দীর্ঘ ইতিহাস ও জনপ্রিয়তা পৃথিবীর যেকোন জায়গায় ভৌগলিক স্কেল এবং টাইমস্কেলে তুলনামূলকভাবে পোকামাকড়ের গোষ্ঠীতে একটি অনন্য ডাটা রিসোর্স সরবরাহ করেছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ভৌগলিক গবেষনার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে পরিণত হয়েছে।

বাস্তসংস্থানগত মূল্য (Ecosystem value)
১. প্রজাপতি ও মথ হচ্ছে একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যকর বাস্তুসংস্থানের সূচক।
২. এগলো বিস্তৃত অন্যান্য অমেরুদন্ডী প্রাণীকে নির্দেশ করে, যা সমস্ত প্রজাতির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি।
৩. প্রজাপতি এবং মথ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলো সবসময় অন্যান্য অমেরুদন্ডী প্রানী দ্বারা সমৃদ্ধ। এরা পরাগায়ন ও কীট পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন পরিবেশগত সুযোগ সুবিধা সরবরাহ করে।
৪. প্রজাপতি ও মথগুলো খাদ্য-শৃঙ্খলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এগুলো পাখি, বাদুড় এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গভোজী প্রাণীর খাদ্য হিসেবে গৃহীত হয়।
৫. প্রজাপতিগুলো বিজ্ঞানীদের দ্বারা একটি আদর্শ জৈব সত্তা বা মডেল অর্গানিজম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারণ এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আবাসস্থল হ্রাস,ভুমির খন্ডায়ন এবং আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। প্রজাপতির সংখ্যার পর্যাপ্ততা বা অপর্যাপ্ততার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বাস্তুসংস্থান কতটুকু সুস্থ্য আছে তা নির্ণয় করতে পারেন।

স্বাস্থ্যগত মূল্য (Health value)
১. মানুষ তার বাড়ির আশেপাশে এবং দেশের সব জায়গায় এদের উড়তে দেখে। এগুলো তাদের মনে প্রশান্তি দেয়।
২. প্রজাপতি দেখতে যাওয়া, প্রজাপতির ছবি তুলতে যাওয়ার জন্য মানুষকে বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষনের জন্য বাইরে ঘুরতে বা হাঁটতে যেতে হয়। এতে করে ঐ ব্যক্তির স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

অর্থনৈতিক মূল্য (Economic value)
১. দেশের বা দেশের বাইরের হাজার হাজার লোক প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থানে বা দেশের বাইরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করছে, ফলে ঐ দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে।
২. বাটারফ্লাই গার্ডেন বা প্রজাপতি বাগানের মাধ্যমে ইকো টুরিজম কে আরও প্রভাবান্বিত করা যায়।
৩. প্রজাপতির ডানাগুলিতে স্কেল বা আঁশগুলোর বিন্যাস অধ্যয়নের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সৌর প্যানেল প্যানেল আবিষ্কার করতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

রেফারেন্স :

  1. butterfly-conservation.org/butterflies/why-butterflies-matter
  2. entopia.com/oneplantatatime/entomology/the-importance-of-butterflies-to-the-world
  3. sciencing.com/what-do-butterflies-do-environment

The post কেন প্রজাপতি এবং মথ গুরুত্বপূর্ণ ? appeared first on NSSB.

প্রজাপতি ও মথদের মেকী চোখ

$
0
0

এ. এইচ. এম. শাফায়েত উল্লাহ প্রধান
নেচার স্টাডি সোসাইটি অফ বাংলাদেশ (এনএসএসবি)

প্রাণীদের নকল বা মেকী চোখকে ইংরেজীতে fake eye, false eye, eyespot, false eyespot, বা ocellus বলে। এই চোখগুলো প্রাণীদের শরীরের যে কোন অংশে থাকতে পারে যা অন্য কোন প্রাণীর চোখের অনুরূপ হয়। মেকী চোখগুলো সাধারণত গোলাকার হয় এবং পার্থক্যযুক্ত বিভিন্ন রঙ এর সমকেন্দ্রিক বৃত্ত দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। প্রজাপতি, সরীসৃপ, বিড়াল গোত্রীয় প্রাণী, পাখি এবং মাছেদের মধ্যে প্রধানত এই বৈশিষ্ট দেখা যায়। এইসব প্রাণীরা নকল চোখগুলো তাদের শিকারী বা শিকারকে ধোঁকা দিতে ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ করতেও নকল চোখগুলো ব্যবহৃত হয়। কিছু প্রাণী যেমন ময়ূর বিপরীত লিঙ্গের সদস্যকে আকর্ষণ করতেও এই চোখগুলো ব্যবহার করে। প্রাণীদের নকল চোখগুলো কখনো অভিযোজনের ফসল আবার কখনো দৈবক্রমে সৃষ্টি হওয়া নকশা হতে পারে। ভ্রূণবিকাশের সময় সক্রিয় থাকা কিছু জিনের মাধ্যমে নকল চোখগুলোর কাঠামো নিয়ন্ত্রিত হয় [1, 2]। প্রাণীজগতের মধ্যে প্রজাপতি ও মথদের মাঝে সব চেয়ে বেশি মেকী চোখ দেখা যায়।

সাধারণত প্রাণীদের শরীরের বিন্যাসগুলো তাদের শিকারীদের কাছ থেকে লুকাতে বিবর্তিত হয়, কিন্তু নকল চোখগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিগোচরতা বাড়িয়ে দেয়। তবে চোখগুলোর স্পষ্টতা তাদের কার্যকারীতা প্রমাণ করে, কারণ এই বৈশিষ্টটি যদি পতঙ্গটির ক্ষতির কারণ হত তবে তা এত ব্যাপকভাবে বিবর্তিত হত না [2]। প্রজাপতি বা মথেরা সাধারণত শিকারীদের হাত থেকে নিজেদের শরীরকে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে (যেমনঃ মাথা) রক্ষা করার জন্য অথবা শিকারীদের অনুকরণ করার জন্য নকল চোখ ব্যবহার করে [1]। প্রজাপতিদের মেকী চোখগুলো সঙ্গী শনাক্তকরণ ও যৌন নির্বাচনেও ব্যবহৃত হয় [1]।

মেকী চোখগুলো শিকারীদের এমন অঙ্গেসমূহের দিকে আক্রমণ করতে প্রলুব্ধ করে যেগুলো প্রজাপতি বা মথদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যক নয়, যেমন পাখার শেষ প্রান্ত [2]। এজন্য দেখা যায় নকল চোখগুলো সাধারণত প্রজাপতি বা মথদের পাখার প্রান্তভাগের দিকে থাকে। শিকারী যদি সরাসরি পতঙ্গটির মাথায় আক্রমণ করে সেক্ষেত্রে তার মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কিন্তু আক্রমণটি যদি পতঙ্গটির পাখার শেষ প্রান্তের দিকে হয় তবে পতঙ্গটির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায় কারণ পতঙ্গটি একটি বিচ্ছিন্ন পাখা নিয়েও বেঁচে থাকতে পারে [2]। যেমনঃ Bicyclus anynana প্রজাতির প্রজাপতিরা যখন বর্ষাকালে খাওয়া ও বংশবৃদ্ধির জন্য বেশি উড়ে তখন তাদের পাখার শেষপ্রান্তে মেকী চোখগুলো বেশি স্পষ্ট হয়, কারণ এ সময় শিকারীদের দ্বারা আক্রমণের শঙ্কা বেশি থাকে। আবার শুষ্ক ঋতুতে তাদের মেকী চোখগুলো অনেকটা নিষ্প্রভ হয়ে যায় যাতে করে তারা পাখিদের কাছে থেকে লুকাতে পারে। হেয়ারস্ট্রিক বা Lycaenidae গোত্রের প্রজাপতিদের (যেমনঃ Calycopis cecrops) মধ্যে এ বৈশিষ্ট্যটি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। পাখার শেষপ্রান্তে ছোট ছোট নকল চোখের সারি এবং ছোট লেজ দেখা যায় যা দেখে পাখি ও মাকড়সার মত শিকারীরা শুঙ্গসহ মাথা ভেবে বিভ্রান্ত হয়। এরা যখন ফুল বা ডালের ওপর বসে তখন এদের মাথা নিচের দিকে দিয়ে বসে এবং পাখার নিচের দিকে থাকা শুঙ্গের মত লেজ বারবার নাড়ায়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে এ কৌশলটি প্রজাপতির মাথায় আক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর [1-3]। নকল চোখ বড় হোক (যেমনঃ Caligo teucer-এ) বা ছোট (যেমনঃ Pyronia tithonus-এ), উভয়ই একটি পাখির আক্রমণকে প্রজাপতির শরীরের ওপর থেকে অন্যদিকে সড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট [4]।

Bicyclus anynana: বর্ষাকালে (বামে) বনাম শুষ্ক ঋতুতে (ডানে)
Pyronia tithonus
Calycopis cecrops: পাখার শেষপ্রান্তে নকল চোখের সারি ও লেজের সাহায্যে নকল মাথা গঠন
বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতিদের ডানায় নকল চোখ

মেকী চোখের মাধ্যমে শিকারীদের অনুকরণ অনেক প্রজাতির প্রজাপতিদের মধ্যে দেখা যায়। এ চোখগুলো শিকারীদের আক্রমণ প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে কারণ আক্রমণকারী শিকারীরা ভাবে তারা হয়ত আরও বড় ও সম্ভাব্য বিপজ্জনক কোন প্রাণীকে দেখতে পাচ্ছে [2]। যেমনঃ অ্যাটলাস মথ প্রজাতিদের (যেমনঃ Attacus atlas) পাখাদ্বয়ের উপরের প্রান্ত দেখতে অনেকটা গোখরা সাপের মত মনে হয় [3, 4]। আউল মথ প্রজাতিরা (যেমনঃ Caligo memnon) তাদের নকল চোখের সাহায্যে একই সাথে পেঁচা ও সাপের প্রতিমূর্তি ধারণ করে [5]। এক গবেষণায় দেখা গেছে পেঁচার চোখের ন্যায় অনুকৃতি এইসব মথদের অন্য পাখি যেমন বড় তিত-এর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে [3]। কিছু পতঙ্গবিজ্ঞানী দাবি করেন Eyed Hawk (Smerinthus ocellatus) মথদের নকল চোখের কারণে তাদের সামনে থেকে দেখতে অনেকটা শিয়াল বা কুকুরের মুখের মত মনে হয় যা শিকারীদের বিভ্রান্ত করে [3]।

Attacus atlas: গোখরা সাপের ন্যায় পাখার পার্শ্ব
Caligo memnon: পেঁচা ও সাপ উভয়ের অনুকরণ
Smerinthus ocellatus: খেকশিয়ালের অনুকরণ
Antheraea polyphemus

কিছু প্রজাতি যেমন Hipparchia semele বিশ্রামরত অবস্থায় তাদের নকল চোখগুলোকে পশ্চাৎপক্ষের পেছনে লুকিয়ে রাখে। কিন্তু যখন তারা মনে করে তাদের শিকারী আশেপাশে এসেছে তখন হঠাৎ করে চোখগুলোকে মেলে ধরে যাতে শিকারী ভয় পেয়ে ওঠে [1, 2]। একইভাবে বুলসাই মথেরা যেমন Automeris liberia তাদের মেকী চোখগুলো সাধারণত তাদের মৃত পাতা সদৃশ সামনের ডানার নিচে লুকিয়ে রাখে। যদি তারা বিরক্ত হয় তবে সাথে সাথে তারা ভূমিতে পড়ে যায় এবং তাদের নকল চোখওয়ালা পশ্চাৎপক্ষদ্বয় ছন্দময়ভাবে দোলাতে থাকে যাতে করে তাদের নকল চোখের দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ আকৃষ্ট হয়। মথটির এই রূপ সত্যিই ভয়ঙ্কর এবং একটি পাখিকে ভয় দেখিয়ে আক্রমণ থেকে নিবৃত্ত করতে যথেষ্ট [4]। কিছু প্রজাতির নকল চোখের মাঝখানে একটু উজ্জ্বল সাদা অংশ দেখা যায় (যেমনঃ Automeris io, Automeris niepelti, Aglia tau) যা চোখে আলোর প্রতিফলনকে অনুকুরণ করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব প্রজাতির মেকী চোখের মাঝে উজ্জ্বল কেন্দ্র আছে তারা উজ্জ্বল কেন্দ্রবিহীন প্রজাতিদের তুলনায় শিকারীদের দ্বারা কম আক্রান্ত হয়। শিকারীরা সাধারণত অস্বাভাবিক চেহারার শিকারদের আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকে [2]। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে Inachis io প্রজাতির প্রজাপতিদের তাদের নকল চোখ ৯৭% ক্ষেত্রে নীল তিত পাখিদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে [4]।

Hipparchia semele
Automeris niepelti
Automeris liberia
Aglia tau: উজ্জ্বল কেন্দ্র বিশিষ্ট নকল চোখ
Automeris io
Inachis io

তবে নকল চোখগুলো প্রকৃতপক্ষে আসল চোখের অনুকরণ করে কিনা কিংবা মানুষ যেভাবে এই নকল চোখগুলোকে দেখে প্রাণীরাও একইভাবে দেখে কিনা তা এখনও অস্পট। এক গবেষণায় বিভিন্ন আকার, আকৃতি ও রঙের পার্থক্যযুক্ত নকল চোখওয়ালা নকল প্রজাপতিদের উডল্যান্ড পাখিদের সামনে পরিবেশন করা হয়। দেখা যায়, পাখিগুলো আসল চোখের ন্যায় দেখতে কালো কেন্দ্র ও সাদা পারিপার্শ্ব বিশিষ্ট চোখগুলোকে যেভাবে পরিহার করে, ঠিক একইভাবে উল্টো বিন্যাসযুক্ত চোখগুলোকে পরিহার করে। এরপর চোখগুলোর আকার বৃত্তাকার থেকে আয়তাকার করে দেয়া হয় এবং দেখা যায় পাখিগুলো ঠিক আগের মতই চোখগুলোকে পরিহার করছে। তবে দেখা গেছে রঙের পার্থক্য বেশি হলে পাখিদের পরিহার করার প্রবণতাও বেড়ে যায়। এর থেকে ধারণা করা যায়, পাখিরা বড় ও রঙের বেশি পার্থক্য যুক্ত স্পষ্ট নকশাযুক্ত নকল চোখগুলো এড়িয়ে যায় যেখানে নকল চোখগুলোর আকৃতি কোন প্রভাব ফেলে না [6]। বিপরীতভাবে অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে স্পষ্টতার চেয়ে শিকারী পাখির চোখের অনুকরণই প্রজাপতিদের নকল চোখের বিবর্তনের কারণ [7]।

নকল চোখগুলো যে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক মথ ও প্রজাপতিদের মধ্যে দেখা যায় তা নয়, লার্ভা (শুঁয়োপোকা) ও পিউপা দশায়ও এদের দেখা যায়। প্রজাপতি বা মথেরা লার্ভা ও পিউপা দশায় একদমই অরক্ষিত থাকে, তাই তাদের আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে নকল চোখগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক প্রজাতির শুঁয়োপোকার মধ্যেই নকল চোখ দেখা যায়। Hemeroplanes triptolemus প্রজাতির লার্ভারা তাদের সামনের ভাগকে স্ফীত করে তাদের নকল চোখের সাহায্যে এমন বেশ ধারণ করে যে শিকারীরা এমনকি মানুষও তাদের সাপ ভেবে ভুল করতে পারে [2]। Eumorpha phorbas এবং Eumorpha labruscae প্রজাতির লার্ভাদের পেছনের প্রান্তের শিং পড়ে গিয়ে একটি নকল চোখ তৈরি হয় যা পলক ফেলার মত স্পন্দিতও হয় এবং শরীরের সামনের প্রান্তের নকল চোখগুলোর মাধ্যমে তারা সাপের প্রতিরূপ ধারণ করে [2, 8]। পাশাপাশি শুঁয়োপোকাদের ওসমেটেরিয়াম নামক সাপের জিহ্বা এর মত একটি অঙ্গ থাকে যার কারণে তাদের আরও বেশি সাপ-সদৃশ মনে হয় [9]। এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব শুঁয়োপোকার নকল চোখ তাদের সাপের মত রূপ দেয় তাদেরকে পাখিরা অনাগ্রহী থাকে [6]। মেকী চোখের কারণে Dynastor darius প্রজাতির পিউপাদের দেখতে শুধু যে পিট ভাইপার সাপের মাথার মত মনে হয় তা নয়, আশেপাশে শিকারীর উপস্থিতি অনুভব করলে এরা এদের মুক্ত প্রান্তকে এমনভাবে সামনে পেছনে নাড়ায় যে তাতে শিকারী ভীতিপ্রাপ্ত হয় [10]।

Hemeroplanes triptolemus প্রজাতির শুঁয়োপোকার সাপের অনুকরণ
Papilio troilus প্রজাতির শুঁয়োপোকা
Eumorpha labruscae প্রজাতির শুঁয়োপোকা
Dynastor darius প্রজাতির শুঁয়োপোকার পিট ভাইপারের অনুকরণ

প্রজাপতি বা মথদের মাঝে নকল চোখের বিস্তৃতি দেখলে বুঝা যায় যে প্রকৃতিতে টিকে থাকার জন্য কত বিচিত্রভাবে এরা বিবর্তিত হয়েছে। নকল চোখগুলোর এত ব্যাপকতা থাকা সত্ত্বেও এদের বিবর্তনের ধারা ও কার্যপ্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা এখনও অপ্রতুল। বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি ও মথের নকল চোখের ওপর বিস্তর গবেষণার মাধ্যমে এদের গুরুত্ব ও কর্মপ্রণালি নির্ধারণ করতে পারলে জীবজগতে প্রাণীদের টিকে থাকার অনেক রহস্য হয়তো উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

তথ্যসূত্রঃ

1.            Wikipedia, Eyespot (mimicry), in Wikipedia. 2020, Wikimedia Foundation, Inc.

2.            Osterloff, E. Why do some butterflies and moths have eyespots?  03/10/2020]; Available from: https://www.nhm.ac.uk/discover/why-do-butterflies-have-eyespots.html.

3.            Gray, R. Eye knew it! Markings on butterflies really do mimic a predator’s gaze. 2015  05/10/2020]; Available from: https://www.dailymail.co.uk/sciencetech/article-3030780/Eye-knew-Markings-butterfly-wings-really-mimic-predator-s-gaze.html.

4.            Hoskins, A. Strategies for Survival.  05/10/2020]; Available from: https://www.learnaboutbutterflies.com/Survival%20Strategies%203.htm.

5.            Gracejeanyu. Mimicry – The Owl Butterfly. 2015  05/10/2020]; Available from: https://bioventures.wordpress.com/2015/02/12/mimicry-the-owl-butterfly/.

6.            Ogden, L.E. Siz ways animals use fake eyes. 2014  03/10/2020]; Available from: http://www.bbc.com/earth/story/20141112-six-ways-animals-use-fake-eyes.

7.            Bona, S.D., et al., Predator mimicry, not conspicuousness, explains the efficacy of butterfly eyespots. Proceedings of the Royal Society B: Biological Sciences, 2015. 282(1806): p. 20150202.

8.            Zielinski, S. Caterpillars Can “Blink” A Fake Eye. 2013  03/10/2020]; Available from: http://wildthings.sarahzielinski.com/blog/caterpillars-can-blink-a-fake-eye/.

9.            Wikipedia, Papilio troilus, in Wikipedia. 2020, Wikimedia Foundation, Inc.

10.         Andrei, M. Mimicry at its finest — or why this is not a snake. 2017  05/10/2020]; Available from: https://www.zmescience.com/other/great-pics/mimicry-larvae-snakes/.

The post প্রজাপতি ও মথদের মেকী চোখ appeared first on NSSB.

Viewing all 39 articles
Browse latest View live